লন্ডনের অফিসে হানা

ব্রেক্সিটের আড়ালেও কি অ্যানালিটিকা

ওই সংস্থার প্রাক্তন রাজনৈতিক পরামর্শদাতা ব্রিটনি কাইজার আজ দাবি করেছেন, ব্রেক্সিটপন্থীদের হয়ে কাজ করেছিল সংস্থাটি। এবং ভোটের সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে ব্রিটেনের মানুষকে যথেষ্টই প্ররোচিত করেছিল তারা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন ও ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০৩:৫৬
Share:

ব্রেক্সিটেও নাম জড়াল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার।

Advertisement

ওই সংস্থার প্রাক্তন রাজনৈতিক পরামর্শদাতা ব্রিটনি কাইজার আজ দাবি করেছেন, ব্রেক্সিটপন্থীদের হয়ে কাজ করেছিল সংস্থাটি। এবং ভোটের সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে ব্রিটেনের মানুষকে যথেষ্টই প্ররোচিত করেছিল তারা। ব্রিটনি স্পষ্টই জানিয়েছেন, ওই সংস্থাটি লোকজনের ব্যক্তিগত তথ্য জোগাড় করত।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকায় ২০১৪ সাল থেকে এ বছরের গোড়া পর্যন্ত কাজ করেছেন কাইজার। সংস্থার মুখপাত্র পদেও ছিলেন। তিনি জানান, ব্রেক্সিটের সঙ্গে যে সংস্থাটি জড়িয়ে, সে কথা মিডিয়ার কাছে অস্বীকার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তবে তাঁর কথায়, ‘‘না, প্রচারে সরাসরি আমরা কাজ করিনি। হয়তো আমাদের কাজ ব্যবহারও করা হয়নি ভোটে। কিন্তু তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের কাজ করা হয়েছিল।’’

Advertisement

সম্প্রতি কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সিইও অ্যালেকজান্ডর নিক্স ব্রেক্সিটের সঙ্গে তাঁদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন পার্লামেন্টারি কমিটির কাছে। দাবি করেছিলেন, প্রচারকারী দলের সঙ্গে দেখা করেছিল তাঁর সংস্থা। সেটাও শুধু সম্ভাব্য ব্যবসার কথা ভেবে। কিন্তু কোনও চুক্তি হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘অর্থের বিনিময়ে বা অর্থ ছাড়া, ব্রেক্সিটের পক্ষ নিয়ে কোনও কাজ আমরা করিনি।’’

ফেসবুক থেকে ভারতীয়দেরও তথ্য চুরি করা হয়েছে কি না, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছ থেকে তার জবাব তলব করেছে নয়াদিল্লি। ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে তাদের।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রিটেনের একটি হাইকোর্ট কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার অফিসে তল্লাশি চালানোর পরোয়ানা মঞ্জুর করে। দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য-সুরক্ষা নজরদারি সংস্থা তখনই জানিয়েছিল, তাদের সন্দেহ ইতিমধ্যেই প্রমাণ (অন্তত ৫ কোটি ফেসবুক প্রোফাইল) লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। গত কাল কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই স্থানীয় সময় রাত ৮টা নাগাদ লন্ডনে সংস্থার সদর দফতরে হানা দেয় তদন্তকারী অফিসারেরা। প্রায় সাত ঘণ্টা তল্লাশি অভিযানের পরে পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় অফিসারদের। ইনফর্মেশন কমিশনার এলিজাবেথ ডেনহ্যাম জানান, তাঁরা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছেন কোনও অনৈতিক উপায়ে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতানো হয়েছিল কি না। তথ্য-চুরিতে ফেসবুকের যোগ থাকার প্রমাণ মেলে কি না, তা-ও খুঁজে দেখা হয়।

মার্কিন সেনেটের বাণিজ্য কমিটির নেতারা (ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান, উভয়পক্ষের) ফেসবুক-মালিক মার্ক জুকেরবার্গকে চিঠি দিয়ে আসন্ন সরকারি শুনানিতে সাক্ষ্য দিতে আসার জন্য সমন পাঠিয়েছেন। এ ছাড়াও এক সপ্তাহে চারটি মামলা দায়ের হয়েছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে। মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা লরেন প্রাইস নাম এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তথ্যচুরির অভিযোগে মামলা করেছেন। ফ্যান ইউয়ান ও রবার্ট ক্যাসে নামে ফেসবুকের দুই শেয়ারহোল্ডারও সিইও জুকেরবার্গ ও সিএফও ডেভিড ওয়েনারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করেছেন। ফেসবুকের শেয়ারহোল্ডারদের হয়ে জুকেরবার্গ, সিওও শেরিল স্যান্ডবার্গ ও সংস্থার পরিচালকদের বিরুদ্ধে চতুর্থ মামলাটি দায়ের করেছেন জেরেমি হ্যালিসে নামে এক আইনজীবী।

একে তো মাথার উপর একাধিক মামলার ভার, তার মধ্যে গ্রাহকদের তথ্য-চুরির কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরে গত এক সপ্তাহে ফেসবুকের বাজার দর কমেছে ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। প্রকাশ্যে জুকেরবার্গের ক্ষমা চাওয়াও আটকাতে পারেনি শেয়ার বেচার হিড়িক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন