হঠাৎই তুমুল চিৎকার, বচসা, হাতাহাতি। বিমান মাটি থেকে প্রায় ৩০ হাজার ফুট উপরে। গত বুধবার মাঝ আকাশে এমন হইচই বাধে মিডল ইস্ট এয়ারলাইন্সের লন্ডনগামী উড়ানে। বাধ্য হয়ে ইস্তানবুলে বিমান নামাতে হল পাইলটকে।
সূত্রের খবর, ওই দিন যাত্রী নিয়ে ঠিক সময়েই বেইরুটের রাফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল বিমানটি। হঠাৎই জেড এ শ নামে এক বয়স্ক যাত্রী উঠে দাঁড়িয়ে তাঁর স্ত্রী ও এক সহযাত্রীর উপরে প্রচণ্ড চিৎকার করছিলেন। শুনে ছুটে আসেন বিমানসেবিকারা। অভিযোগ, বোঝাতে গেলে কোনও কথা শোনেন না ওই যাত্রী। উল্টে আক্রমণ করেন তাঁদের। প্রবীণকে থামাতে গেলে তিনি বিমানসেবিকাদের এক জনকে ধাক্কা ও আর এক জনকে ঘুষি মেরেছেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে যাত্রীদের মধ্যে থেকে এক যুবক বিমানসেবিকাদের সহায়তা করতে উঠে আসেন। তত ক্ষণে এই গোলমালের কথা পৌঁছেছে পাইলটদের কানে। মাঝ আকাশে ঝামেলা না করতে বার বার অনুরোধ করা হয় ওই প্রবীণকে। বোঝানোর দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর শান্ত হয়ে আসনে গিয়ে বসেন তিনি। এখানেই শেষ নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সংবাদমাধ্যমকে জানান, ওই ঘটনার পর বড়জোর ১৫ মিনিট বসে ছিলেন ওই যাত্রী। অভিযোগ, তার পরে শৌচালয়ের দিকে যাওয়ার সময়ে বিমানসেবিকাদের মুখোমুখি পড়লে ফের তাঁদের আক্রমণ করেন তিনি। প্রবীণকে উঠতে দেখে আগেই সতর্ক হয়ে ছিলেন যুবক যাত্রী। এ বারও পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নেমে পড়েন তিনি। এর পরে ওই দু’জনের হাতাহাতি বেধে যায়। বিমানের মধ্যে এই তুমুল গোলমালের মুখে পড়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেক যাত্রীই। পরে কয়েক জন মিলে প্রবীণ ও যুবককে জাপটে ধরে এক রকম জোর করেই তাঁদের আসনে নিয়ে যান।
গোলমালের জেরে তত ক্ষণে বিমানের মুখ ঘোরানোর সিদ্ধান্ত নেন পাইলটেরা। ইস্তানবুলের আতাতুর্ক বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানেই বিমান অবতরণ করেন তাঁরা। তার পর চার জন নিরাপত্তা রক্ষী ডেকে ওই প্রবীণ যাত্রীকে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। অনেক যাত্রীই এই পুরো ঘটনাটি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে রেখেছিলেন। ঘটনার পরেই তা দ্রুত ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। ওই যাত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি মদ্যপ অবস্থায় ওই আচরণ করেছিলেন বলে দাবি।
উড়ানে বোমা রয়েছে শুনে রবিবার কুয়েতে জরুরি অবতরণ করে ইউরোউইঙ্গসের জার্মানিগামী একটি বিমান। তল্লাশিতে অবশ্য কিছু মেলেনি।