COVID Cases

এক দিনে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ সংক্রমণ চিনে, দাবি রিপোর্টে

ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে ২৪ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। যা কি না দেশের জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ। এক দিনে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ৭০ লক্ষ বাসিন্দা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:২৩
Share:

চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি) জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে এক দিন কমপক্ষে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। প্রতীকী ছবি।

করোনা সংক্রমণের সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে চিন। এ দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি) জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে এক দিন কমপক্ষে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। সরকারের তরফে অবশ্য এই তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। একটি আমেরিকান সংবাদ সংস্থা তাদের রিপোর্টে বিষয়টি দাবি করেছে। এনএইচসি অবশ্য এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেনি।

Advertisement

গত বুধবার এনএইচসি-র একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকের যাবতীয় কথাবার্তা আচমকাই প্রকাশ্যে এসেছে আমেরিকান সংস্থাটির রিপোর্টে। জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে ২৪ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। যা কি না দেশের জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ। এক দিনে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ৭০ লক্ষ বাসিন্দা। যদিও এই সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল দৈনিক সংক্রমণ মাত্র ৩০০০। এই তথ্য যদি সঠিক হয়, তা হলে চিন তাদের নিজেদের রেকর্ডও ভাঙল। এর আগে এ বছর জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ছিল দিনে ৪০ লক্ষ।

আমেরিকান সংবাদ সংস্থাটি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, বৈঠকে কোভিডে মৃতের সংখ্যা নিয়ে কিছু বলা হয়নি। যদিও কমিশনের প্রধান মা শিয়াওওয়েই জানিয়েছেন, যে নিয়মে কোভিডে মৃত্যু চিহ্নিত করা হচ্ছে, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু তাঁর নির্দেশ, কোভিড আরও দ্রুত গতিতে ছড়ালে তখন মৃত্যুকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তার আগে পর্যন্ত শুধুমাত্র যাঁরা কোভিড থেকে নিউমোনিয়া হয়ে মারা গিয়েছেন, তাঁদের নামই মৃত্যু তালিকায় তোলা হবে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই মুহূর্তে সরকার উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের সংখ্যা প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে। শুধুমাত্র উপসর্গযুক্তদের সংখ্যা জানানো হচ্ছে। সে তথ্যও সঠিক নয় বলেই ধরে নিচ্ছেন অনেকে।

Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, চিন করোনা-শূন্য নীতি তুলে দেওয়ার পর থেকে হাসপাতালে ভর্তি সংক্রান্ত কোনও তথ্য তাদের পাঠাচ্ছে না। নয়া সংক্রমণ ঢেউয়ে রোগের চরিত্র, বৈচিত্র সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও সাড়াশব্দ করেনি বেজিং। তাতে অনেকেরই অভিযোগ, চিন এখনও তথ্য গোপন করে চলেছে।

মোটেই ফেলে দেওয়ার মতো অভিযোগ নয়। চিনের কিংদাও শহরে কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত এক সংবাদমাধ্যমে শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছিলেন সেখানকার পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বো তাও। দাবি করেছিলেন যে, ওই শহরে দৈনিক ৪.৯ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ মানুষ করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন এবং সপ্তাহান্তে তা আরও ১০ শতাংশ বাড়বে। দ্রুত ‘সেন্সর’ করা হয় ওই বক্তব্যকে। আজ চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন সরকারি ঘোষণাপত্রে বলেছে, শুক্রবার সারা দেশে মাত্র ৪১০৩ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। কেউ মারা যাননি।

গত ৭ ডিসেম্বর চিন ‘জ়িরো কোভিড পলিসি’ প্রত্যাহার করে। এর আগে পর্যন্ত চিন বলে এসেছিল, দেশ করোনা-শূন্য না হওয়া ইস্তক কোনও বিধিনিষেধ তোলা হবে না। লকডাউন, ঘরবন্দি দশা, দূরত্ববিধি, মাস্ক পরা সবই বহাল ছিল। টানা তিন বছর ধরে এই নিয়মের জেরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল মানুষ। সাম্প্রতিক একটি ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে মানুষ। লকডাউনে একটি বাড়িতে আগুন লাগে। বাসিন্দারা বাড়ি থেকে বেরোতে না পেরে আগুনে পুড়ে মারা যান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র কোভিড নীতি বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। আচমকাই সব নিয়ম তুলে দেয় সরকার। হু তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, এর পরেই কোভিড নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির ঘটনা বেড়েছে চিনে। যদিও ওই রিপোর্টেও কোনও সংখ্যার হিসেব নেই। দিনে কত জন কোভিড নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, তার উল্লেখ নেই কোথাও।

সরকারে প্রাণপণে ঢেকে রাখার চেষ্টা করলেও চারপাশের ছবিতে সবটা স্পষ্ট। হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা নেই। চিকিৎসকেরা সংক্রমিত। স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভিড নিয়েই কাজ করছেন। দোকানে ওষুধ নেই। সমস্ত ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থাকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওষুধ উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন