তিরিশেই উড়ান থামল ইউ-এর

আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে উড়ান শুরু হয়েছিল তাঁর। কিন্তু মাঝপথেই থেমে গেল ডানা। মাত্র তিরিশেই মারা গেলেন চিনের প্রথম মহিলা যুদ্ধবিমান চালকদের অন্যতম ইউ শুং।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:১৭
Share:

চিনের প্রথম মহিলা যুদ্ধবিমান চালক ইউ।

আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে উড়ান শুরু হয়েছিল তাঁর। কিন্তু মাঝপথেই থেমে গেল ডানা। মাত্র তিরিশেই মারা গেলেন চিনের প্রথম মহিলা যুদ্ধবিমান চালকদের অন্যতম ইউ শুং।

Advertisement

শনিবার হাবেই প্রদেশে বিমান চালনা সংক্রান্ত একটি প্রশিক্ষণ চলাকালীন বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ইউয়ের। বায়ুসেনা তরফে এখনই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে না চাইলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, শনিবার ওই প্রশিক্ষণের সময় একটি জে-১০ যুদ্ধবিমান চালাচ্ছিলেন ইউ। সঙ্গে ছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের আরও এক সহ-বিমানচালক। প্যারাশ্যুট খুলে বিমান থেকে ঝাঁপ দেওয়ার সময় অন্য একটি জে-১০ যুদ্ধবিমানের একটি ডানায় ধাক্কা লাগে ইউয়ের। তাঁর সহ-বিমানচালক নিরাপদে প্যারাশ্যুট খুলে নেমে আসতে পারলেও ফেরা হয়নি ইউয়ের। আকাশেই ফুরিয়ে গেল তাঁর স্বপ্ন-উড়ান।

১৯৮৬ সালে সিয়াচেনের সংঝাউতে জন্ম ইউয়ের। ২০০৫ সালে পিপলস লিবারেশন আর্মির বায়ুসেনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০০৯ সালে সেখান থেকে পাশ করে বেরোন ইউ। চিনের প্রথম ১৬ জন মহিলা যুদ্ধবিমান চালকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, ২০১২ সালে যে চার জন মহিলা প্রথম জে-১০ যুদ্ধবিমান চালানোর অনুমতি পেয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেও অন্যতম ছিলেন ইউ।

Advertisement

সম্প্রতি একটি চিনা সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউ জানান, আকাশে উড়তে পারেন বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আকাশে ওড়ার কথা ছাড়া আর কোনও কিছুই ভাবতে চাই না আমি। যদি সম্ভব হত, সারাক্ষণ আকাশের দিকেই তাকিয়ে থাকতাম। একটা সম্পূর্ণ অন্যরকম দুনিয়া। আর সেটা ভীষণ সুন্দর।’’

‘সোনালি ময়ূর’ নামেও পরিচিত ছিলেন ইউ। চিনের এক স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় দং তাও জান লিখেছেন, ‘‘জীবনের সব চেয়ে সুন্দর সময়ে চলে গেলেন ইউ।’’ আর এক জনের কথায়, এর আগেও একাধিক বার দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে জে-১০ যুদ্ধবিমান। বিমানে গঠনগত কিংবা প্রযুক্তিগত কোনও ত্রুটির জন্যই বারবার দুর্ঘটনা কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।

ইউয়ের এই হঠাৎ চলে যাওয়া মানতে পারছেন না তাঁর সহযোদ্ধা ও বন্ধুবান্ধবরাও। ইউয়ের এক বন্ধু ওয়ান ইয়েং জানাচ্ছেন, ভীষণই ভাল মানুষ ছিলেন ইউ। বন্ধুদের নিয়ে থাকতে পছন্দ করতেন। বিমান চালনার পাশাপাশি বই পড়তে ভালোবাসতেন। ঘটনার দু’দিন আগেই ওয়ানের সঙ্গে কথা হয়েছিল ইউয়ের। দেখা করারও কথা ছিল তাঁদের। আরও অনেকটা উঁচুতে ওড়ার স্বপ্নের মতোই বাকি রয়ে গেল সেটাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন