মোদীর অরুণাচল সফরের বিরুদ্ধে যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেজিং, তাকে অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না নয়াদিল্লি। গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
ফের বেসুরো বাজল চিন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অরুণাচল সফরের তীব্র বিরোধিতা করল চিনা বিদেশ মন্ত্রক। আজ, বৃহস্পতিবারই অরুণাচল গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। রাজধানী ইটানগরে তিনি জনসভাও করেছেন। অরুণাচলে মোদীর এই জনসভাতেই বেজায় চটেছে বেজিং। চিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাইলে অরুণাচল এড়িয়ে চলুন ভারতীয় নেতারা— এমনই বার্তা এ দিন দেওয়া হল বেজিঙের তরফে।
চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেছেন, ‘‘চিন-ভারত সীমান্তের প্রশ্নে চিনের অবস্থান ধারাবাহিক এবং স্পষ্ট।’’ তাঁর কথায়, ‘‘তথাকথিত অরুণাচল প্রদেশকে চিন কোনও দিনই স্বীকৃতি দেয়নি এবং ওই বিতর্কিত এলাকায় ভারতীয় নেতার সফরের তীব্র বিরোধিতা করা হচ্ছে।’’ শুধু মৌখিক বিরোধিতা করে বা বিবৃতি দিয়েই যে বেজিং ক্ষান্ত থাকবে না, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন শুয়াং। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে অত্যন্ত কঠোর বিরোধিতা নথিবদ্ধ করানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
অরুণাচল নিয়ে বরাবরই অত্যন্ত স্পর্শকাতর প্রতিক্রিয়া দেখায় চিন। ভারতের রাষ্ট্রপতি হন বা প্রধানমন্ত্রী, অন্য দেশের কূটনীতিক হন বা বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা— নয়াদিল্লির তরফ থেকে কাউকে অরুণাচলে যেতে দেখলেই চিন তীব্র প্রতিবাদ জানা। অরুণাচল প্রদেশ আসলে তিব্বতের দক্ষিণ অংশ এবং ভারত তা অবৈধ ভাবে দখল করে রেখেছে— চিনের বক্তব্য এমনই। এবং এই অবস্থানে চিন দীর্ঘ দিন ধরেই অনড়। নরেন্দ্র মোদী এ দিন অরুণাচলে যেতেই তাই ফের নিজেদের অবস্থানের কথা দিল্লিকে মনে করিয়ে দিতে চাইল বেজিং।
বৃহস্পতিবার ইটানগরে সমাবেশ করেছেন মোদী। উন্নয়নের জন্য অরুণাচলকে বা উত্তর-পূর্ব ভারতকে বার বার দিল্লিতে ছুটতে হবে না, দিল্লিই পৌঁছবে উত্তর-পূর্বে— এমন বার্তাও দিলেন। ছবি: পিটিআই।
শুধু অরুণাচলে নয়, চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিরোধ আরও নানা এলাকায় রয়েছে। সীমান্ত বিরোধ কত বড় সঙ্কট ডেকে আনতে পারে, তা ডোকলামে (ত্রিদেশীয় সীমান্ত) টের পেয়েছিল দু’দেশই। তার পর থেকে অবশ্য সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনও বিবাদ নিয়ে দু’দেশই সতর্ক পদক্ষেপ করছে। কূটনৈতিক তথা দ্বিপাক্ষিক আদান-প্রদান অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। মলদ্বীপের রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়েও ভারতের সঙ্গে বিশদ আলোচনা চালিয়েছে চিন।
আরও পড়ুন: মলদ্বীপ: পাঁজাকোলা করে সাংসদদের বার করে দিল সেনা
আরও পড়ুন: বিপজ্জনক পরমাণু কৌশল পাকিস্তানের, সতর্কবার্তা আমেরিকার
অরুণাচল প্রসঙ্গে কিন্তু চিন সুর আবার চড়াল। ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি যতটা গতি পেয়েছে, তা ধাক্কা খাক, এমন কোনও পদক্ষেপ ভারতের করা উচিত নয় বলে এ দিন চিনের তরফে মন্তব্য করা হয়েছে। গেং শুয়াং বলেছেন, ‘‘চিনের অনুরোধ, ভারত যেন তার নিজের প্রতিশ্রুতিকে সম্মান করে, সংশ্লিষ্ট ঐকমত্য মেনে চলে এবং এমন কোনও পদক্ষেপ না করে, যা সীমান্ত সংক্রান্ত প্রশ্নকে জটিল করে তুলতে পারে।’’