অর্থনীতির পরে এ বার মানবাধিকার নিয়েও আত্মপ্রচারে নামল চিন। সরকারি রিপোর্ট পেশ করে বেজিংয়ের দাবি, ২০১৪-এ নাগরিকদের মানবাধিকার রক্ষায় অভাবনীয় উন্নতি করেছে দেশ। তবে উন্নয়নের এই ফিরিস্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, দারিদ্র দূরীকরণ থেকে শুরু করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষা, আইনি সংশোধন, এমন কী, বাক্ স্বাধীনতা রক্ষার ক্ষেত্রেও ২০১৪ সাল জুড়ে দুর্বার গতিতে এগিয়েছে চিন। উন্নতির খতিয়ান নিয়ে বেজিংয়ের এই ধরনের রিপোর্ট অবশ্য এই প্রথম নয়। ১৯৯১ থেকে অন্তত বারো বার এই ধরনের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
সাম্প্রতিক অতীতে চিনের বিরুদ্ধে বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বেজিং চোখ রাঙিয়েই চলেছে নাগরিকের বাক্ স্বাধীনতার উপর। তাই সরকারি তরফে পেশ করা রিপোর্টের পরে সমালোচকদের দাবি, মানবাধিকার লঙ্ঘনের কালি মুছতেই নিজের ঢাক নিজে পেটাচ্ছে বেজিং।
দেশের সামগ্রিক মানবাধিকার উন্নয়নের যে খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টে— প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৩-র থেকে ২০১৪-য় আর্থিক বৃদ্ধির পরিমাণ ৭.৪ শতাংশ। কিন্তু এই বৃদ্ধির হার যে ১৯৯০-এর পর থেকে সব চেয়ে কম, তার উল্লেখ নেই।
২০১৪-য় দেশ জুড়ে মোট কতগুলি সংবাদপত্র, পত্রিকা ও বই প্রকাশিত হয়েছে, তার হিসেব দিয়ে বেজিং বাক্ স্বাধীনতায় উন্নতির পক্ষেও যুক্তি দিয়েছে। কিন্তু এই সময়সীমার মধ্যেই ইন্টারনেটে নানাবিধ সাইটে যে ভাবে সরকারি তরফে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তার উল্লেখ নেই একেবারেই। একে ‘দ্বিচারিতা’ বলে সরব হয়েছে দেশেরই একাংশ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষা নিয়েও বেজিংয়ের দাবি মানতে চাইছেন না সমালোচকরা। উইঘুর মুসলিমদের বঞ্চনার প্রসঙ্গও তুলছেন কেউ কেউ।