গায়ে কম্বল জড়িয়ে রোদ্দুরের মধ্যে শুয়ে মেয়েরা, এ কেমন শাস্তি!

শীত কাল নয়। আবহাওয়া রীতিমতো গরম। দুপুরের আকাশে মাথার উপর গনগনে সূর্য। আর সেই তেতে ওঠা রোদ্দুরের মধ্যেই গায়ে কম্বল জড়িয়ে অ্যাথলেটিক ট্র্যাকে টান টান হয়ে শুয়ে আছে জনা কুড়ি ছাত্রী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১১:৩৫
Share:

শীত কাল নয়। আবহাওয়া রীতিমতো গরম। দুপুরের আকাশে মাথার উপর গনগনে সূর্য। আর সেই তেতে ওঠা রোদ্দুরের মধ্যেই গায়ে কম্বল জড়িয়ে অ্যাথলেটিক ট্র্যাকে টান টান হয়ে শুয়ে আছে জনা কুড়ি ছাত্রী। ওরা সকলেই ‘ফরেন স্টাটিজ’ নিয়ে পড়াশোনা করে। তাদের শুয়ে থাকার এ দৃশ্য দেখতে দর্শকও রয়েছে প্রায় হাজার দুয়েক। তারাও বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রী। তবে, অভিনব কিছু প্রদর্শনের জন্য বা কোনও মহড়ার উদ্দেশ্যে ওই ছাত্রীরা ট্র্যাকে শুয়ে ছিল না। নিদেন পক্ষে সান-বাথ নিতেও নয়। ওটা তাদের শাস্তি। প্রশিক্ষকের দেওয়া সেই শাস্তি মাথায় পেতে নিয়েই তারা কম্বল গায়ে শুয়ে পড়েছিল ট্র্যাকের উপর। শাস্তির এমন বহরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিশ্ব জুড়ে।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন চিনে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের নিয়ম চালু আছে। দেশাত্মবোধ বাড়ানোর সরকারি এই কর্মসূচি অনুযায়ী ইউনান প্রদেশের চাংসার একটি কলেজের ওই ছাত্রীরা সম্প্রতি গিয়েছিলেন সামরিক এক প্রশিক্ষণ শিবিরে। আর সেখানেই তাদের কপালে জোটে ওই শাস্তি। তবে শুধু ছাত্রীদের নয়, জনা তিরিশেক ছাত্রকেও গায়ে কম্বল জড়িয়ে ওই রোদ্দুরের মধ্যে দৌড় করানো হয়। সেটাও শাস্তি হিসেবে। তাদের মাথায় আবার পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্ল্যাস্টিকের বালতিও। রোদ্দুরের মধ্যে এমন শাস্তি ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হল কেন? স্পষ্ট জবাবের বদলে প্রশিক্ষকের হয়ে একপ্রকার সাফাই গেয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। জানিয়েছেন, সামরিক প্রশিক্ষণে এমনটা তো স্বাভাবিক। তাই বলে ছাত্রীদেরও ওই ভাবে শুইয়ে রাখা হবে? স্কুল কর্তৃপক্ষের এক জন বলেন, ‘‘মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্যই ওই শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।’’ আরও এক ধাপ এগিয়ে কলেজের ডেপুটি ডিরেক্টর জি ইয়ং বলেন, ‘‘কোথায় রোদ্দুর! বাইরের আবহাওয়া তো তখন বেশ মনোরম ছিল। আর তাপমাত্রাও ছিল ৩২ ডিগ্রির নীচে!’’

প্রশিক্ষকের শাস্তি মেনে যারা ওই গরমের মধ্যে ট্র্যাকের উপর শুয়ে ছিল, তারা এই ঘটনায় বেশ বিব্রত। অত ছাত্রছাত্রীর মধ্যে তাদের যে ভাবে ওই শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তা রীতিমতো ‘লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেছে এক ছাত্রী। হতাশায় ভেঙে পড়ে এক ছাত্রী বলে, ‘‘এর পর বাড়িতে বা প্রতিবেশীদের কাছে মুখ দেখাব কী করে!’’ তবে ছাত্রীদের ক্ষেত্রে এমন শাস্তি না দেওয়াই ভাল বলে মন্তব্য করেছেন ওই কলেজের এক ডেপুটি ডিরেক্টর। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েদের এই ধরনের শাস্তি না দেওয়াই ভাল। ওদের মনের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে।’’ আর সেটা যাতে না হয়, তাই কলেজ কর্তৃপক্ষ মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে ওই ছাত্রীদের কাউন্সিলিং-এর ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন