আইএসআইএল জঙ্গিদের হুমকিতে উত্তর ইরাকের মসুল ছাড়তে বাধ্য হলেন ২৫ হাজার খ্রিস্টান। কুর্দিস্তানের শরণার্থী শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা।
ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুল দখলে আসার পরেই সুন্নি আইএসআইএল জঙ্গিরা ফতোয়া জারি করেছিল, অবিলম্বে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের। দিতে হবে বিশেষ কর। তা না হলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে চলে যেতে হবে শহর ছেড়ে। জঙ্গিদের নির্দেশ না মানলে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়।
জঙ্গিদের ফতোয়া অনুযায়ী, রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ন’টার মধ্যে মসুল ছাড়তে বলা হয়েছিল খ্রিস্টানদের। প্রাণের ভয়ে সময়সীমা পার হওয়ার আগেই মসুল ছাড়লেন ২৫,০০০ মানুষ। ইরাকের বৃহত্তম খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান লুইস সাকোর কথায়, “ঘর ছাড়া পরিবারগুলি ডোহুক, আরবিলের দিকে রওনা হয়েছে। ইরাকের ইতিহাসে এই প্রথম মসুল খ্রিস্টান শূন্য।”
ইরাকের উত্তর-পশ্চিমে নিনেভে প্রদেশের অন্যতম শহর মসুল। মাস খানেক আগে আইএসআইএলের অভিযানের সময়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাড়িঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন বহু খ্রিস্টান। প্রধানমন্ত্রী নুরি-অল মালিকির শিয়াপ্রধান সরকারের সঙ্গে সুন্নি আইএসআইএলের সংঘর্ষের তীব্রতা কমায় ধীরে ধীরে ফিরেও আসেন তাঁদের অনেকে। আর্থিক সঙ্গতির অভাবেই মূলত ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা। সাকো জানালেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্তও মসুলে প্রায় ২৫,০০০ খ্রিস্টান।
খ্রিস্টানদের চেয়েও করুণ দশা নিনেভে প্রদেশের অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির। আইএসআইএল অধিকৃত এলাকা থেকে ইয়াজিদিস, তুর্কমেন, শাবাক সম্প্রদায়গুলির চিহ্ন পর্যন্ত মুছে ফেলা হচ্ছে। ছয় সপ্তাহের সংঘর্ষে ঘর ছাড়া প্রায় ছ’লক্ষ মানুষ। নিহত হয়েছেন হাজারেরও বেশি। বৃহস্পতিবারও তিকরিতের উত্তরে একটি বিমান ঘাঁটিতে হানা দেয় জঙ্গিরা।