ভারত-মার্কিন সম্পর্কে মেঘ

দক্ষিণপন্থার পতাকা উড়িয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউসে বসেন তখন হর্ষধ্বনি শোনা গিয়েছিল বিজেপি তথা আরএসএস শিবিরে। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, সেই উল্লাস এখন বদলে যাচ্ছে হতাশায়। গত কয়েক মাসে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতবিন্দুগুলি বাড়তে বাড়তে ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমশ তলানিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ০৩:১০
Share:

দীর্ঘদিন ধরে কোমর বেঁধেছিল দিল্লি। তার পরেও ভারত-আমেরিকার নতুন মডেলের (২+২) প্রতিরক্ষা এবং বিদেশনীতি বিষয়ক বৈঠক পিছিয়ে দিয়েছে মার্কিন সরকার। আজ ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, বৈঠক পিছোনোর জন্য ভারত দায়ী নয় এবং কিছু দিন পরেই বৈঠকটি হবে। কিন্তু রাজনৈতিক সূত্রের মতে, এই ঘটনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অধোগতিই ধরা পড়ছে।

Advertisement

দক্ষিণপন্থার পতাকা উড়িয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউসে বসেন তখন হর্ষধ্বনি শোনা গিয়েছিল বিজেপি তথা আরএসএস শিবিরে। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, সেই উল্লাস এখন বদলে যাচ্ছে হতাশায়। গত কয়েক মাসে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতবিন্দুগুলি বাড়তে বাড়তে ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমশ তলানিতে।

এর মধ্যেই গত দু’দিন রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি দিল্লিতে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে। সূত্রের খবর, ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও তিনি দিল্লিকে চাপ দিয়েছেন ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করার জন্য। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রভিশ কুমারকে আজ বিবৃতি দিয়ে বলতে হয়েছে, ‘‘আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে সমস্যা হয়নি। সমস্ত মনগড়া গল্প চালানো হচ্ছে।’’

Advertisement

কেন এমন শংসাপত্র দাখিল করতে হচ্ছে? কারণ একাধিক। প্রথমত ইরান থেকে তেল আমদানির প্রশ্নে ঝুলছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া। বলা হয়েছে নভেম্বর মাসের মধ্যে আমদানি বন্ধ না করলে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে ভারত। রাশিয়া থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনার পথেও রয়েছে মার্কিন রক্তচক্ষু। ট্রাম্প সরকারের ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক রিপোর্টে কড়া সমালোচনা করা হয়েছে মোদী সরকারের। আজও নিকি হ্যালি সহিষ্ণুতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করে বলেন, ‘‘ভারত এবং আমেরিকার মতো বৈচিত্রপূর্ণ দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা, পারস্পরিক সম্মান এবং সহিষ্ণুতা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’

সম্পর্কের অবনতিতে সাম্প্রতিক শুল্ক-যুদ্ধেরও ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আমেরিকা ভারতীয় ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের উপর বড় পরিমাণ শুল্ক বসানোর পরই একই পরমাণ শুল্ক আমেরিকার ২৯টি পণ্যের উপর বসিয়ে দিল্লি জানিয়েছে, শুল্ক বসানো হয়েছে, কিন্তু এখনই তা জারি করা হচ্ছে না! ৪৫ দিন পর করা হবে। সূত্রের মতে, দু’দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠক করে এর সমাধানসূত্র বার করার চেষ্টা করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন