Coronavirus in America

আমেরিকায় ছ’লক্ষের দিকে এগোচ্ছে মৃত্যু

প্রায় চার লক্ষের ব্যবধানে মৃত্যুতে তৃতীয় স্থানে ভারত। প্রাণহানি ২ লক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২১ ০৫:০৯
Share:

— ছবি সংগৃহীত

বিশ্বে আজ ১৫ কোটি ছাড়াল সংক্রমণ। মারা গিয়েছেন ৩১ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি। দৈনিক সংক্রমণে ভারত এখন শীর্ষে। কিন্তু আমেরিকাও পিছিয়ে নেই। বরং সার্বিক চিত্র ধরলে আরও ভয়াবহ অবস্থা সে দেশের। আমেরিকা এখনও সংক্রমণের চুড়োয় বসে রয়েছে। মারা গিয়েছেন ৫ লক্ষ ৮৮ হাজার বাসিন্দা। প্রায় চার লক্ষের ব্যবধানে মৃত্যুতে তৃতীয় স্থানে ভারত। প্রাণহানি ২ লক্ষ।

Advertisement

মহাদেশের হিসেব কষলে বিষয়টা আরও ভয়াবহ। ‘প্যান আমেরিকান হেল্‌থ অর্গানাইজেশন’-এর ডিরেক্টর ক্যারিসা এটিন জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা, দুই মহাদেশের সমস্ত দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। গত এক সপ্তাহে গোটা বিশ্বে যে সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ২৫ শতাংশ দুই আমেরিকায়। অর্থাৎ বিশ্বে প্রতি চার জন মৃতের মধ্যে এক জন এই দুই মহাদেশের বাসিন্দা।

ক্যারিসা বলেন, ‘‘এই এখানে, এই দুই আমেরিকা মহাদেশে এত মৃত্যু। মধ্য আমেরিকায় মারাত্মক ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে।’’ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, নতুন স্ট্রেনের জেরেই সংক্রমণ বেড়েছে। যার জন্য টিকাকরণের গতি কিছুটা কমেছে। তা ছাড়া টিকার ঘাটতিও রয়েছে।

Advertisement

কোস্টা রিকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। গত দেড় বছরে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। গুয়াতেমালায় হাসপাতাল উপচে পড়ছে। কলম্বিয়া, পেরু, বলিভিয়া, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, সব ক’টি দেশেই সংক্রমণ বাড়ছে। দক্ষিণ আমেরিকায় ব্রাজিলের অবস্থা বরাবরই সঙ্গীন। সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে তারা। ১ কোটি ৪৫ লক্ষের বেশি করোনা আক্রান্ত। মৃত্যুতে তারা দ্বিতীয়, ৩ লক্ষ ৯৮ হাজার। তৃতীয় ভারত।

বিশ্বের যে অংশ কোভিড টিকা পেয়েছে, তার বেশির ভাগই প্রবীণ, নয়তো ফন্ট্রলাইন ওয়ার্কাস বা প্রথম সারির কোভিড-যোদ্ধা। এই পরিস্থিতিতে টিকার ক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখেছে ‘সেন্টারস ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি)। এই সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে সিডিসি-র ‘মর্বিডিটি অ্যান্ড মর্টালিটি উইকলি রিপোর্ট’-এ। গবেষণাপত্রটিতে সিডিসি দাবি করেছে, ৬৫ বছর ও তার ঊর্ধ্বে যাঁদের বয়স, তাঁদের মধ্যে যাঁরা প্রতিষেধক পেয়েছেন, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা ৯৪ শতাংশ কম, যাঁরা ভ্যাকসিন পাননি তাঁদের থেকে।

গবেষণাটি হয়েছে আমেরিকায়। সে দেশে মূলত দু’টি সংস্থার কোভিড টিকা দেওয়া হচ্ছে— ফাইজ়ার-বায়োএনটেক এবং মডার্না। টিকার কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার দু’সপ্তাহ পরে করোনা-আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ভয় অনেকটাই কমে যেতে দেখা গিয়েছে।

সিডিসি-র ডিরেক্টর রোশেল ওয়ালেন্সকি বলেন, ‘‘এই খবরগুলোই সাহস দিচ্ছে। আমেরিকায় ৬৫ বছর ও তাঁর ঊর্ধ্বে থাকা বাসিন্দাদের দুই-তৃতীয়াংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এ পর্যন্ত যা বোঝা যাচ্ছে, প্রতিষেধক দারুণ ভাবে কাজ দিচ্ছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যে রিপোর্ট মিলেছিল, তা-ই অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে।’’

ইজ়রায়েলও তাদের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় টিকাকরণ নিয়ে একই রিপোর্ট দিয়েছে। ইজ়রায়েলে শুধুই ফাইজ়ারের টিকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু টিকা সম্পর্কে তারাও বলেছে, যাঁদের একটি ডোজ় নেওয়া হয়েছে, তাঁদেরও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি ৬৪ শতাংশ কমে যাচ্ছে। দু’টি ডোজ়ে কার্যকারিতা আরও বেশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন