Tedros Adhanom Ghebreyesus

ভুল পথে বিপদ, নেতাদের সতর্ক করলেন হু প্রধান

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস ‘তাঁদের’ কারও নাম করেননি। কিন্তু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোভিড অতিমারি মোকাবিলার ক্ষেত্রে বেশ কিছু দেশ ভুল পথে চলেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জেনিভা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ০৬:৫৫
Share:

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। ছবি: সংগৃহীত।

কেউ প্রশ্ন তুলেছেন লকডাউনের যৌক্তিকতা নিয়ে। কেউ কার্যত হুমকি দিয়ে স্কুল-কলেজ খুলে দিতে চাইছেন। গত কাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস ‘তাঁদের’ কারও নাম করেননি। কিন্তু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোভিড অতিমারি মোকাবিলার ক্ষেত্রে বেশ কিছু দেশ ভুল পথে চলেছে। রাষ্ট্রপ্রধানদের একাংশ পরস্পর-বিরোধী মন্তব্য করছেন। ফলে তাঁদের উপর থেকে মানুষের বিশ্বাসটাই উঠে যেতে পারে।

Advertisement

ইঙ্গিত অনেকটাই স্পষ্ট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কার্যত বলে দিয়েছেন, যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই তিনি মাস্ক পরবেন। এ-ও বলেছেন, স্কুল না-খুললে অনুদান বন্ধ করে দেবেন। হু-র অনুদান অনেক আগেই বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো মাস্ক ব্যবহারে অনীহা দেখিয়েছেন। নিজে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। তা সত্ত্বেও লকডাউনের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ গোপন করেননি। ব্রিটেনে বহু টালবাহানার পরে দোকান-বাজারে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হয়েছে। কিন্তু লকডাউনে দেরি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে বরিস জনসনের সরকার। ভারতে লকডাউন শেষ হওয়ার পরে হুহু করে রোগী বাড়ছে। বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

এই পরিস্থিতিতে হু প্রধান বলেছেন, ‘‘সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রাথমিক পদক্ষেপগুলোই করা না-হলে একটাই রাস্তা পড়ে থাকে। তা হল, পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ, খারাপতর এবং অত্যন্ত খারাপের দিকে যাবে। সংক্রমণের লাগামছাড়া বৃদ্ধি রুখতে না-পারলে আগেকার স্বাভাবিক জীবনে ফেরা অদূর ভবিষ্যতে অসম্ভব।’’ গতিবিধিতে কড়াকড়ির আর্থিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাবের কথাও মাথায় রেখেছেন হু প্রধান। তা সত্ত্বেও আক্ষেপ করেছেন যে, করোনাভাইরাস এখনকার পয়লা নম্বর শত্রু হওয়া সত্ত্বেও বহু দেশের সরকার ও মানুষের আচরণে তার কোনও প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

Advertisement

আরও পড়ুন: চিন সাগর নিয়ে বেজিংকে কড়া বার্তা আমেরিকার

আরও পড়ুন: অপুষ্টি-ক্ষুধা বাড়াবে অতিমারি: রাষ্ট্রপুঞ্জ

গেব্রিয়েসাস বলেছেন, ‘‘মানুষের প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টাকেই তাঁরা (কিছু রাষ্ট্রপ্রধান) অবহেলা করছেন। সেটা হল, বিশ্বাস।’’ তাঁর মতে, সরকারের উচিত কোভিড স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আরও স্পষ্ট বার্তা দেওয়া। জনতারও তা মানা উচিত। গত কাল হু প্রধান যখন এই মন্তব্য করছেন, ঠিক তার আগের দিনেও নতুন সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছে বিশ্বে। তার ৮০ শতাংশই ১০টি দেশে। ৫০ শতাংশের বেশি নতুন সংক্রমণ আমেরিকা ও ব্রাজিলে। রাখঢাক না-করেই ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন হু-র আপৎকালীন বিষয়ক প্রধান মাইক রায়ান। বলেছেন, ‘‘স্কুলগুলো যেন রাজনৈতিক ফুটবল খেলার মাঠ না-হয়ে ওঠে। সেটা আমাদের বাচ্চাদের প্রতি সুবিচার হবে না।’’

বিশ্বে করোনা

মৃত - ৫,৭৮,২৮৩
আক্রান্ত - ১,৩৩,৬৪,০১০
সুস্থ - ৭৮,০০,২৮৮

এ দিকে, আজ দিল্লিতে হু এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেন ১০টি তিব্বতি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। করোনাভাইরাসের সূত্র খুঁজতে হু-র গবেষকদের একটি দল এখন চিনে। নির্বাসিত তিব্বতি পার্লামেন্টের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দোলমা গেয়ারি বলেন, ‘‘(চিনের তরফে) দাবি করা হচ্ছে, চিনা সরকারের আমন্ত্রণেই সে দেশে গিয়েছে গবেষকদের দলটি। তাই তাঁদের ফিরে আসা উচিত।’’ চিন-বিরোধী স্লোগান লেখা টি-শার্ট ও মাস্ক পরা তিব্বতি দলটি দাবি করেছে, স্বচ্ছ তদন্ত হোক। চিন স্পষ্ট জানাক, হু-এর দল তাদের আমন্ত্রণে সে দেশে যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন