তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা। ছবি- রয়টার্স
পঞ্চদশ দলাই লামা ভারত থেকেই আসবেন। চিন কাউকে পরবর্তী দলাই লামা হিসেবে বেছে নিলে তিব্বতিরা তাঁকে আদৌ মেনে নেবেন না। আর তাতে চিনের উদ্বেগ বাড়বে বই কমবে না।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সোমবার এ কথা বলেছেন ৬০ বছর আগে ভারতে আশ্রয় নেওয়া চতুর্দশ দলাই লামা। চিনের লাল ফৌজের হাত থেকে বাঁচতে তিব্বতের লাসা থেকে সেনার ছদ্মবেশে সে দিন বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। দু’দিন দু’রাত পায়ে হেঁটে, ব্রহ্মপুত্র নদ পেরিয়ে, দুর্গম হিমালয়ের বাধা টপকে দলাই ভারতে পৌঁছেছিলেন ১৯৫৯ সালের ১৭ মার্চ। চিন-অধিকৃত তিব্বত ছেড়ে পালিয়ে আসা দলাই লামা, তাঁর পরিবার পরিজন ও অনুগামীদের ভারত আশ্রয় দিয়েছিল হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায়।
সেই ধর্মশালায় গাছে ভরা ছোট ছোট পাহাড় আর তুষারে ঢাকা সুউচ্চ পর্বতে ঘেরা বৌদ্ধ মন্দিরের পাশে তাঁর অফিসে বসে নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী চতুর্দশ লামা বলেছেন, ‘‘সে দিন চিন তিব্বতিদের ভাষা আর সংস্কৃতির স্বাধীনতার দাবি মেনে নেয়নি। আমাদের দমিয়ে দিতে লাল ফৌজ নামিয়ে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিল তিব্বতে। আজও বেজিং আমার মৃত্যুর পর তাদের পছন্দের দলাই লামা বেছে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাতে চিনেরই উদ্বেগ বাড়বে। তিব্বতিরা সেই লামাকে মেনে নেবেন না।’’
আরও পড়ুন- ৬০ বছর আগে কী ভাবে তিব্বত থেকে পালিয়েছিলেন দলাই লামা?
আরও পড়ুন- আড়াই দশক ধরে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের যৌন নির্যাতনের বিষয়ে জানি: দলাই লামা
৮৩ বছর বয়সী চতুর্দশ দলাই লামা চিনকে কটাক্ষ করে জানিয়েছেন, দলাই লামার ‘পুনরাবির্ভাব’-এর জন্য এখন বেজিংই বেশি আগ্রহী। তাঁর কথায়, ‘‘আমি খুব অবাক হব না, যদি আমার মৃত্যুর পর আপনাদের দু’জন দলাই লামাকে দেখতে হয়। তাঁদের মধ্যে আমার এক জন উত্তরসূরি হবেন ভারত থেকে। আর এক জনকে বেজিং বেছে নেবে। তিনি পরবর্তী দলাই লামা হবেন চিন থেকে। ওরা (চিন) আমার পরের দলাই লামা নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করছে। বেজিংয়ের বক্তব্য, চিনের সাবেক রাজবংশের নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী দলাই লামা বেছে নেওয়ার অধিকার তাদেরই।’’
তবে তিব্বতি ধর্মগুরু জানিয়েছেন, শেষ কথা বলবেন বৌদ্ধধর্মাবলাম্বী তিব্বতের মানুষই। তাঁরা যদি লামাদের বাঁচিয়ে রাখতে চান, তা হলে লামারা থাকবেন। আর তখনই প্রশ্ন উঠবে কে হবেন পরবর্তী দলাই লামা।