বাস্তুহারা: ধস কেড়েছে সব কিছু। কলম্বিয়ার মোকোয়া শহরে। ছবি: রয়টার্স
ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা আড়াইশো ছাড়িয়ে গেল কলম্বিয়ায়। গত শুক্রবার মাঝরাত থেকে চলা একটানা বৃষ্টিতে বেড়ে যায় বেশ কয়েকটি নদীর জল। কাদামাটি ভরা সেই জল উপচে ভেসে যায় রাজধানী মোকোয়ার রাস্তাঘাট। জলের স্রোতে পাথর, গাছ ভেসে এসে গুঁড়িয়ে দেয় স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি। রেডক্রস জানিয়েছে, শুক্রবারের সেই ভয়াবহ রাতের পর থেকে এখনও অবধি খোঁজ নেই দু’শোরও বেশি মানুষের। আহত অন্তত চারশো।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে এক হাজার সেনা ও পুলিশ। মোকোয়া ও সংলগ্ন এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি খুবই কষ্টকর। আর্তদের সাহায্যের জন্য যা যা করা সম্ভব, আমরা সবই করছি। কলম্বিয়ার বিমানবাহিনী পানীয় জল ও ওষুধপত্র সরবরাহ করছে তাঁদের। আহতদের অনেককেই চিকিৎসার জন্য বিমানে করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অতিবৃষ্টির নেপথ্যে জলবায়ুর পরিবর্তনকেই দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর বক্তব্য, গোটা মাের্চ মোকোয়ায় যা বৃষ্টি হয় তার অর্ধেকই এক রাতের মধ্যে হয়ে গিয়েছে। এই মার্চ থেকেই বর্ষা শুরু হয় কলম্বিয়ায়। ফলে বন্যা ও ধসের মতো দুর্যোগ ভবিষ্যতেও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
উদ্ধাকারীরা জানাচ্ছেন, নদী উপচে এত দ্রুত জলস্রোত ভেসে আসে, যে পালানোর সুযোগটুকুও পাননি বহু মানুষ। স্রোতের টানে ঘরের ভিতর থেকে ভেসে গিয়েছে কোলের সন্তান। ছোট ছোট সেই সব শিশুদের ছবি নিয়ে এখন পাগলের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাবা-মা’রা। .যদি কেউ সন্ধান দিতে পারেন! ‘‘আমার ছোট্ট বাচ্চা। ওকে খুঁজে পাচ্ছি না’’, কেঁদে ওঠেন এক মা। চোখের সামনে ভিটেমাটি ভেসে যেতে দেখে দিশাহারা অনেকেই। মোকোয়ার মেয়র জানিয়েছেন, শনিবার থেকে বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে গোটা শহরে।