শিনমোতে উদ্ধারকাজ চলছে। ছবি: রয়টার্স।
প্রবল বৃষ্টি, ধস আর বন্যার জেরে বিধ্বস্ত চিনের একটা বড় অংশ। দক্ষিণ, মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের অবস্থা খুবই শোচনীয়। বিপর্যস্ত জনজীবন। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানানো হয়েছে, বন্যায় শুধুমাত্র চিনের দক্ষিণাংশেই মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। নিখোঁজ একশোর কাছাকাছি মানুষ। ইতিমধ্যেই চারে চার লক্ষ মানুষকে সরানো হয়েছে সুরক্ষিত জায়গায়।
গত শনিবার সিচুয়ান প্রদেশের পর্বত ঘেরা শিনমো গ্রামে ধস নেমেছিল। ৬২টি বাড়ি সে দিনই মাটিতে মিশে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে পাঁচ জনের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনও নিখোঁজ শতাধিক। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, সে দিনের ধসে অবরুদ্ধ হয়েছে নদীর গতিপথ। দেড় হাজার মিটার রাস্তাও ধ্বংসস্তূপে মিশে গিয়েছে। তিন হাজারেরও বেশি উদ্ধারকর্মী গত তিন দিন ধরে গোটা শিনমো গ্রামে প্রাণের স্পন্দন খোঁজার চেষ্টা করে চলেছেন। তবে স্থানীয় এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, এখন ওই ধ্বংসস্তূপে আর কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
সিচুয়ানের মতোই খারাপ অবস্থা হুনান প্রদেশের। গত ২২ তারিখ থেকে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে সেখানে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, এগারো হাজার মানুষকে তাঁদের বাসস্থান থেকে সরানো হয়েছে। বন্যায় হুনানে মৃত্যু হয়েছে ছ’জনের। গোটা প্রদেশে ক্ষতিগ্রস্ত ৪০ হাজার বাড়ি। জারি হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা। শনিবার হুনানের লুক্সি কাউন্টিতে ধসের ফলে মৃত্যু হয়েছিল এক পরিবারের তিন জনের।
হুনান ছাড়াও বন্যায় বিধ্বস্ত জিয়াংশি, গুইঝো, ইউনান প্রদেশ। ওই সব প্রদেশ থেকেও প্রচুর মানুষের মৃত্যুর খবর এসেছে। জিয়াংশির স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ৪৭টি কাউন্টির আড়াই লক্ষ মানুষ এখন গৃহহীন। তাঁদের প্রত্যেককেই আশ্রয় শিবিরে সরানো হয়েছে। মৃত ৬। গুইঝো প্রদেশের অবস্থাও প্রায় একই। ন’জনের মৃত্যু হয়েছে।
বর্ষার এই মরসুমে এমনিতেই ধসের প্রবণতা রয়েছে চিনের পার্বত্য এলাকায়। তার মধ্যে এ বছর এরই মধ্যে মাত্রাছাড়া বৃষ্টির ফলে জল বাড়ছে বিভিন্ন নদীর। ইয়াংতজে উপত্যকায় বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে মোট ১৪টি নদী। দেশের বিভিন্ন অংশেই জলাধার থেকে জল উপচে পড়ছে। এরই মধ্যে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী সাত দিন আরও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই মতো প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে বেজিং সরকার।