Harvard University

হার্ভার্ডের উপর ট্রাম্পের ‘কোপ’, কতটা বিপাকে ভারতীয়-সহ বিদেশি পড়ুয়ারা? মাঝপথে বন্ধ হবে পড়াশোনা!

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন জানিয়েছে, বিদেশ থেকে আর পড়ুয়াদের ভর্তি নিতে পারবে না হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি, এ-ও জানিয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন যে সব বিদেশি পড়ুয়া পড়াশোনা করছেন, তাঁদের দ্রুত অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৫ ০৯:৪৭
Share:

ডোনাল্ড ট্রাম্প। — ফাইল চিত্র।

আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আবার নেমে এসেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘কোপ’। তার জেরেই বিপাকে হাজার হাজার বিদেশি পড়ুয়া। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬,৮০০ বিদেশি পড়ুয়া ভর্তি হন। তাঁদের মধ্য রয়েছেন ভারতীয়ও। বেশির ভাগ পড়ুয়াই স্নাতক স্তরে ভর্তি হন। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়তে চলেছে তাঁদের ভবিষ্যতে।

Advertisement

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন জানিয়েছে, বিদেশ থেকে আর পড়ুয়াদের ভর্তি নিতে পারবে না হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি, এ-ও জানিয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন যে সব বিদেশি পড়ুয়া পড়াশোনা করছেন, তাঁদের দ্রুত অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে। নয়তো তাঁদের ভিসা বাতিল করা হবে। সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। আমেরিকার নিরাপত্তা সচিব ক্রিস্টি নোয়াম জানিয়েছেন, বিদেশি পড়ুয়াদের বিষয়ে তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর আরও অভিযোগ, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হামাসের সমর্থনে উস্কানি দেওয়া হয়। এর ফলে ইহুদি পড়ুয়ারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।

আমেরিকায় কে প্রবেশ করবেন, কে নয়, সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির। প্রশ্ন উঠছে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার পরে কি সেখানে স্নাতক স্তরে আর পড়াশোনা করতে পারবেন বিদেশি পড়ুয়ারা? নোয়াম জানিয়েছেন, যাঁরা এ বছর স্নাতকের শেষ সিমেস্টার দিচ্ছেন, তাঁদের কোনও সমস্যা হবে না। সামনের সপ্তাহেই তাঁরা স্নাতক পাশ করে যাবেন। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বদলাতে চলেছে। যে বিদেশি পড়ুয়ারা এখনও সেখানে স্নাতক পড়ছেন, তাঁদের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে। তা না করলে তাঁরা আমেরিকায় বসবাসের অনুমোদন হারাবেন। চলতি শিক্ষাবর্ষে যে বিদেশি পড়ুয়ারা সেখানে ভর্তি হওয়ার কথা ভেবেছিলেন, তাঁরাও আর তা পারবেন না।

Advertisement

এর আগে পঠনপাঠনের মান পড়ে যাওয়ায় বা পড়ুয়াদের যথেষ্ট সুবিধা না দেওয়ার কারণে কোনও কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিদেশি পড়ুয়া ভর্তি নেওয়ার লাইসেন্স বাতিল করেছে আমেরিকার সরকার। কিন্তু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে যে কারণে ‘কোপ’ নেমেছে, তা আগে হয়নি বলেই জানিয়েছেন আমেরিকার শিক্ষা দফতরের আধিকারিক সারা স্প্রেইটজ়ার।

এপ্রিলের শুরু থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। পশ্চিম এশিয়ায় হামাস-ইজ়রায়েল যুদ্ধের আবহে আমেরিকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্যালেস্টাইনের সমর্থনে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। মার্কিন প্রশাসন অভিযোগ করে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ইহুদি-বিদ্বেষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সঠিক পদক্ষেপ করছেন না বলেও অভিযোগ তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ বন্ধ করার জন্য কী কী করণীয়, সে বিষয়ে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল সরকারের তরফে। কিন্তু সরকারের দেওয়া শর্তাবলি মানতে রাজি ছিল না হার্ভার্ড। ‘শাস্তিস্বরূপ’ অনুদান বন্ধের কথা বলে মার্কিন প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ কোটি ডলারেরও বেশি (ভারতীয় মুদ্রায় ১৭ হাজার কোটিরও বেশি) আর্থিক অনুদান বন্ধের ঘোষণা করে ট্রাম্প সরকার। অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। সেই আবহে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ৪৫ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় চার হাজার কোটি) আর্থিক অনুদান বন্ধ করা হয়। এ বার সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি পড়ুয়া ভর্তির শংসাপত্রও বাতিল করল ট্রাম্প প্রশাসন। আমেরিকার নিরাপত্তা সচিব ক্রিস্টি নোয়াম জানিয়েছেন, বিদেশি পড়ুয়াদের বিষয়ে তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর আরও অভিযোগ, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হামাসের সমর্থনে উস্কানি দেওয়া হয়। এর ফলে ইহুদি পড়ুয়ারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement