National News

নিশানায় সংখ্যালঘুরাই, দিল্লি নিয়ে মত মার্কিন কমিশনের

দিল্লি অবশ্য মার্কিন কমিশনের সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

স‌ংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২৫
Share:

দিল্লিতে জ্বলছে আগুন। —ফাইল চিত্র

দিল্লিতে বেছে বেছে সংখ্যালঘুদেরই নিশানা করে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফর শেষের পরেই তাদের এমন মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। আজই রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান মিশেল ব্যাশলে বলেছেন, দিল্লিতে ‘মুসলিমদের উপরে আক্রমণ সত্ত্বেও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা’-র খবরে তিনি চিন্তিত। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়েও ‘গভীর উদ্বেগ’ জানান তিনি।

Advertisement

দিল্লি অবশ্য মার্কিন কমিশনের সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, মার্কিন কমিশন ও সংবাদমাধ্যমের একাংশ কেন্দ্রকে দুষে যা বলছে তা মিথ্যে। রাজনৈতিক স্বার্থে এই কাজ করছে তারা। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার আজ বলেন, ‘‘হিংসা রুখে দিল্লিতে শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে শান্তি ও সৌভ্রাত্র ফেরানোর আবেদন জানিয়েছেন। এমন অবস্থায় দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য না-করার আর্জি জানাচ্ছি।’’

দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়ে গত কালই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন কংগ্রেসের একাধিক সদস্য। এ বার মার্কিন কমিশনটির চেয়ারম্যান টনি পার্কিন্স বলেছেন, বেছে বেছে শুধু সংখ্যালঘুদের উপরে আক্রমণ, তাঁদের বাড়িঘর, দোকান, ধর্মস্থান জ্বালিয়ে দেওয়ার যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তা উদ্বেগজনক। তাঁর কথায়, ‘‘যে কোনও দায়িত্বশীল সরকারের কাজ, ধর্ম নির্বিশেষে নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।’’ কমিশনার অরুণিমা ভার্গবও বলেন, ‘‘দিল্লি জুড়ে বর্বর-লাগামহীন হিংসা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আমরা খবর পেয়েছি, মুসলিমদের উপরে আক্রমণ রুখতে দিল্লি পুলিশ কিছুই করেনি। নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকারও।’’

Advertisement

জেনিভায় মানবাধিকার পরিষদের বৈঠকে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্যাশলে আজ বলেন, ‘‘ভারতের সব গোষ্ঠীর মানুষেরা বিরাট সংখ্যায়, মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভাবেই এই আইনের বিরোধিতা করেছেন। আস্থা রেখেছেন তাঁদের দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার দীর্ঘ ঐতিহ্যে। মুসলিমরা আক্রান্ত, পুলিশ নিষ্ক্রিয়। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদীদের উপরে পুলিশি বাড়াবাড়ি হয়েছে। আমি উদ্বিগ্ন। নেতাদের আর্জি, হিংসা রোধ করুন।’’ কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বাড়াবাড়ি মাত্রায় বলপ্রয়োগের অভিযোগ সত্ত্বেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, প্রায় ৮০০ মানুষ এখনও আটক রয়েছেন।

একটি ব্রিটিশ দৈনিক দিল্লির ঘটনায় সরাসরি মোদীর দিকেই আঙুল তুলেছে। তারা লিখেছে, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মুখে শান্তি ও সৌভ্রাত্রের কথা বলছেন। অথচ তিনিই দেশকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন। নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে পথ আটকে প্রতিবাদে নামা মুসলিমদের কপিল মিশ্রের মতো বিজেপি নেতার উস্কানির জেরেই আক্রমণ করে সশস্ত্র বাহিনী। অসহায় মুসলিমরাই ছিলেন তাদের নিশানা ও শিকার। আর পুলিশ ছিল দর্শক।’’ দৈনিকটির বক্তব্য, বিজেপি নেতারা আক্রমণকারীদের উৎসাহ দেন এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদীদের ‘খুনি ও ধর্ষক’ বলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন