বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স।
থরহরি কম্প শুরু হয়ে গিয়েছে।
বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান বসিয়ে দিতে শুরু করেছে বিশ্বের বহু উড়ান সংস্থা। তার মধ্যে চিনের এয়ার চায়না, চায়না ইস্টার্ন ও চায়না ওয়েস্টার্ন রয়েছে। রয়েছে ইন্দোনেশিয়ান এয়ারলাইন্স। রবিবারের দুর্ঘটনার পরে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, আপাতত তাদের বাকি ৫টি ম্যাক্স বিমান বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
গত ২৯ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারের এই ম্যাক্স বিমান ভেঙে পড়ে মারা গিয়েছিলেন ১৮৯ জন। এই রবিবার ইথিওপিয়ান উড়ান সংস্থার ওই ম্যাক্স বিমানই ভেঙে পড়ে মারা গেলেন ১৫৭ জন। বিশ্ব জুড়ে উড়ান সংস্থাগুলির মনে ম্যাক্স নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ম্যাক্সে ঠিক কী ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডেরাল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)।
ভারতে জেট এবং স্পাইসজেট— এই দুই সংস্থা ম্যাক্স বিমান চালায়। জেটের রয়েছে ৮টি বিমান, স্পাইসের ১৩টি। জেট আরও ২২৫টি এবং স্পাইসজেট ১৫৫টি ওই বিমান কিনতে বোয়িং-কে বরাত দিয়েছে। আর্থিক অবস্থার কারণে ভাড়া নেওয়া ম্যাক্সের টাকা মেটাতে না পারায় তা বসিয়ে দিতে হয়েছে জেট-কে। আগামী দিনে তারা ম্যাক্স বা অন্য বিমান কিনতে পারবে কি না তা সংস্থায় নতুন করে বিনিয়োগের উপরে নির্ভর করবে।
স্পাইসজেট সোমবার জানিয়েছে, তাদের ১৩টি ম্যাক্স বিমান সূচি অনুযায়ী উড়ছে। বাকি ১৫৫টি বিমান কেনার বরাত নিয়েও কোনও সংশয় নেই। স্পাইসের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই বিমান বসিয়ে দেওয়া হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নেবে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। আমাদের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি।’’ বিমান মন্ত্রক সূত্রের খবর, হাজার ঘণ্টা উড়ানের অভিজ্ঞতা আছে এমন চালকদের এখন ম্যাক্স চালানোর দায়িত্ব দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে লায়ন এয়ারের দুর্ঘটনার পরে জেট ও স্পাইসজেটকে সতর্ক করে দিয়েছিল ডিজিসিএ। তবে বিমান বসিয়ে দেওয়ার কথা বলেনি। সে বার তদন্তে জানা গিয়েছে, বিশেষ একটি যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য আচমকাই মাঝ আকাশ থেকে নীচে নেমে এসেছিল বিমানটি। দুই পাইলট (প্রধান পাইলট ছিলেন ভারতীয়) চেষ্টা করেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। এ বারেও যদি দেখা যায়, ম্যাক্সে সে রকম ত্রুটি দেখা যাচ্ছে, তা হলে বিশ্ব জুড়ে ম্যাক্স ওড়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাঝারি মাপের এয়ারবাস ৩২০-র প্রতিযোগী হিসেবে উঠে এসেছিল ম্যাক্স। কয়েক বছর ধরে সংস্থার সিংহভাগ মুনাফাই এসেছে ম্যাক্সের হাত ধরে। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, ফ্লাই দুবাই, এয়ার কানাডা-সহ বিশ্বের বহু বড় উড়ান সংস্থা ম্যাক্স ব্যবহার করে। এই অবস্থায় সবাই ম্যাক্স বসিয়ে দিয়ে আগাম বরাতও যদি বাতিল করে, বড়সড় লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে বোয়িং-এর।