ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
বহু বার ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বার পশ্চিম এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে সংঘাত থামানোর কৃতিত্ব দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই দু’টি দেশ হল আর্মেনিয়া এবং আজ়ারবাইজান। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, শুক্রবার আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনইয়ান এবং আজ়ারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম অলিয়েভ হোয়াইট হাউসে যাবেন। তার পর ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ওই দু’জন ‘ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি’তে স্বাক্ষর করবেন।
সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, “এই দুই দেশ (আর্মেনিয়া এবং আজ়ারবাইজান) বহু বছর ধরে যুদ্ধ করছে। এর ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।” একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সংযোজন, “যুদ্ধ থামানোর জন্য বহু নেতা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাঁরা এখনও পর্যন্ত কোনও সাফল্য পাননি। তার পর আমার প্রশাসন দু’পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে ধন্যবাদ। তাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক কাজ করছেন।”
প্রসঙ্গত, আর্মেনিয়া এবং আজ়ারবাইজান দুই দেশই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল। স্বাধীনতার পরে ১৯৯১ সালে বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে সীমান্ত সংঘর্ষ শুরু হয় দু’দেশের। এর পরে ২০২০ সালে দু’দেশের যুদ্ধে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন। খ্রিস্টান প্রধান নাগোরনো-কারাবাখে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল আজ়ারবাইজানের বিরুদ্ধে। সে সময় মস্কোর মধ্যস্থতায় সংঘর্ষ বিরতি হয়েছিল। কিন্তু এ বার ইউক্রেন সমস্যায় ব্যতিব্যস্ত ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে সেই ভূমিকা নেওয়া আর সম্ভব হয়নি।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন করে সংঘর্ষ শুরুর পরে পাকিস্তান এবং চিনের মদতে নাগোরনো-কারাবাখের অধিকাংশ এলাকাই দখল করে নিয়েছে আজ়ারবাইজান। বস্তুত, ৪,৪০০ বর্গকিলোমিটারের নাগোরনো-কারাবাখ সোভিয়েত জমানায় আজ়ারবাইজানের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই অঞ্চলের প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দার অধিকাংশই আর্মেনীয় খ্রিস্টান। তাঁরা মুসলিম রাষ্ট্র আজ়াবাইজানের অধীনে থাকতে নারাজ। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আজ়ারবাইজান সেনার ধারাবাহিক হামলায় ওই এলাকার লক্ষাধিক খ্রিস্টান নাগরিক আর্মেনিয়ায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বহু খ্রিস্টান গ্রামবাসীকে খুনও করেছে পাকিস্তান-তুরস্কের মদতপুষ্ট আজ়ারবাইজান ফৌজ। ১৯৯৪ সালের লড়াইয়ের পর থেকে নাগোরনো-কারাবাখের বিস্তীর্ণ অঞ্চল আর্মেনিয়ার মদতপুষ্ট খ্রিস্টান মিলিশিয়া গোষ্ঠী ‘আর্টসাক ডিফেন্স আর্মি’র দখলে ছিল। কিন্তু গত দু’বছর ধরে আজ়ারবাইজান ফৌজের ধারাবাহিক হামলায় রণে ভঙ্গ দিয়েছে তারা।