রুশ আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠক

ভোট-বিতর্কে নাম জুনিয়র ট্রাম্পেরও

তেমনটাই কথা ছিল নাকি! হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর পেয়ে গত শনিবার ওই বৈঠকের কথা প্রথম ফাঁস করে মার্কিন একটি পত্রিকা। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০১৬-র ৬ জুন ট্রাম্প টাওয়ারে মস্কোর আইনজীবী নাতালিয়া ভেসেলনিৎস্কায়ার সঙ্গে বিশেষ আলোচনা হয় প্রেসিডেন্ট-পুত্রের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৪
Share:

ভোটের আগে রুশ আইনজীবীর সঙ্গে বিতর্কিত সেই বৈঠকের কথা অবশেষে মেনেই নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট-পুত্র ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র। তবে এ-ও জানালেন, প্রেসি়ডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে কোণঠাসা করা যায়, বৈঠকে এমন কোনও তথ্যই পাননি তিনি।

Advertisement

তেমনটাই কথা ছিল নাকি! হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর পেয়ে গত শনিবার ওই বৈঠকের কথা প্রথম ফাঁস করে মার্কিন একটি পত্রিকা। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০১৬-র ৬ জুন ট্রাম্প টাওয়ারে মস্কোর আইনজীবী নাতালিয়া ভেসেলনিৎস্কায়ার সঙ্গে বিশেষ আলোচনা হয় প্রেসিডেন্ট-পুত্রের। ঘটনাচক্রে, এর দিন কয়েক আগেই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পান ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বৈঠকে ছিলেন ট্রাম্পের জামাই জ্যারেড কুশনার এবং ট্রাম্পের তৎকালীন প্রচার ম্যানেজার পল ম্যানাফোর্ট-ও। প্রাথমিক ভাবে সংবাদমাধ্যমের ইঙ্গিত উড়িয়ে দিয়ে জুনিয়র ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, সে দিন ভোট নিয়ে কথাই হয়নি তাঁদের।

কিন্তু চাপের মুখে পড়ে আজ যা বললেন, তাতে আমেরিকার নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিতর্কই ফের জোরালো হয়ে উঠল বলে মনে করছেন মার্কিন কূটনীতিকেরা। প্রেসিডেন্ট-পুত্র যদিও মচকাতে নারাজ। ট্রাম্প এই বৈঠকের কথা কিছুই জানতেন না বলে তাঁর দাবি— বৈঠক শুরুর পরে রুশ আইনজীবীই প্রথম বলেন, তাঁর কাছে রাশিয়ার এমন কয়েক জনের তথ্য আছে, যাঁরা হিলারির সমর্থনে সরাসরি অর্থ ঢালছে ডোমোক্র্যাটিক পার্টিতে। কিন্তু খানিক বাদেই স্পষ্ট হয়ে যায় এমন কোনও তথ্যই ছিল না নাতালিয়ার কাছে।

Advertisement

প্রেসিডেন্ট-পুত্রের দাবি কিন্তু খোলা মনে মানতে পারছে না মার্কিন সংবাদমাধ্যমের একাংশ। ট্রাম্প তো বটেই, সম্প্রতি হামবুর্গে তাঁর প্রশ্নে উত্তরে মার্কিন ভোটে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ সরাসরি উ়ড়িয়ে দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিনও। কিন্তু বিতর্ক থামছে কই!

ওই রুশ আইনজীবীর আবার দাবি, ট্রাম্প-টাওয়ারের বৈঠকে ভোটের প্রচার নিয়ে কোনও কথাই হয়নি। মস্কোর হয়ে তিনি প্রতিনিধিত্বও করেননি কোনও দিন। বিতর্কিত ওই বৈঠক নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রেসিডেন্ট। মন্তব্য করেননি ম্যানাফোর্টের আইনজীবীও। জ্যারেডের আইনজীবী অবশ্য জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁর মক্কেল নিরাপত্তা আধিকারিকদের এই বৈঠকের কথা জানিয়েছিলেন।

২০-৩০ মিনিটের ওই বৈঠকে তা হলে কী নিয়ে কথা হয়েছিল? জুনিয়র ট্রাম্পের দাবি, ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ নাতালিয়া হঠাৎই বিষয় পাল্টে মার্কিন নাগরিকদের রুশ শিশু দত্তক নেওয়া নিয়ে একটি জনপ্রিয় প্রকল্পের আলোচনা জুড়ে দেন। তিনি আরও বলেন, ‘‘মুহূর্তের মধ্যে আমরা বুঝে যাই, প্রচার সংক্রান্ত আলোচনার আড়ালে আদতে এটা নিয়েই কথা বলতে ম্যানহাটনে এসেছিলেন মস্কোর প্রতিনিধি।’’

এমনটাই যদি হয়ে থাকে, গোড়াতেই তা কেন জানাননি প্রেসি়ডেন্ট-পুত্র— প্রশ্ন তুলছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের একাংশ। হোয়াইট হাউসে আসার আগে থেকেই প্রেসিডেন্ট নিজেই নানা ভাবে যাদের চটিয়ে বসে আছেন। নয়া বিতর্ক সামনে আসায় ফের সংবাদমাধ্যমকেই কাঠগড়ায় তুলতে চাইছে ট্রাম্প শিবির। হোয়াইট হাউসের মিডিয়া সচিব ওই বৈঠকটিকে বিশেষ আমল না দিলেও, প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, প্রেসিডেন্টকে অস্বস্তিতে ফেলতে চেয়েই এ নিয়ে খামোখা জলঘোলা করছে মিডিয়া। তাঁর অভিযোগ, ভোট-বিতর্কে এ বার প্রেসিডেন্টের গোটা পরিবারকেই জড়ানোর চেষ্টা চলছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট নেতা বি স্কিফ যদিও তদন্তে ওই তিন জনকেই জেরার মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাইছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন