ওসামার দশা হবে না তো হাফিজের

ওসামা বিন লাদেনের মতো দশা হতে পারে হাফিজ সইদেরও। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন পাক সেনেটররা। ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে অভিযান চালিয়ে আল কায়দা নেতা লাদেনকে হত্যা করেছিল মার্কিন নেভি সিল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪৯
Share:

ওসামা বিন লাদেনের মতো দশা হতে পারে হাফিজ সইদেরও। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন পাক সেনেটররা। ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে অভিযান চালিয়ে আল কায়দা নেতা লাদেনকে হত্যা করেছিল মার্কিন নেভি সিল।

Advertisement

২০১৮ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে মিল্লি মুসলিম লিগ (এমএমএল)-এর ব্যানারে লড়তে চান লস্কর ই তইবার নেতা হাফিজ। কিন্তু পাক নির্বাচন কমিশনে এমএমএল-কের নথিভুক্তিকরণ এখনও হয়নি। গৃহবন্দি দশা থেকে এই জঙ্গি নেতা মুক্তি পাওয়ার পরে ফের তাঁকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিল আমেরিকা। এ বার হাফিজ ভোটে লড়তে চাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে ওয়াশিংটনের। গত বুধবারই ফের হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী হাফিজকে ছেড়ে ভাল করেনি পাকিস্তান। হাফিজের ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়টির দিকেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে। শুক্রবার আফগানিস্তানে দাঁড়িয়ে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও জানিয়েছেন, প্রয়োজনে অ্যাবটাবাদের মতো অভিযান চালাতে অনুমতি দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পরেই এ দিন হাফিজের ভোটে লড়া ঠেকাতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছে পাক সরকার। ইসলামাবাদ হাইকোর্টে এমএমএল-কে রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করেছে তারা। কূটনৈতিক শিবিরের মতে পর পর মার্কিন চাপের কারণেই পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ।

এই পরিস্থিতিতে জামাত উদ দাওয়ার নেতা হাফিজকে নিয়ে উদ্বিগ্ন পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির সেনেটররা। তাঁদের আশঙ্কা লাদেনের মতো হাফিজের বিরুদ্ধেও অভিযান চালাতে পারে আমেরিকা। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের দায়ে হাফিজের মাথার দাম ১ কোটি ডলার ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, নুজহাত সাদিকের নেতৃত্বাধীন বিদেশ মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র সেনেটর ফারাতুল্লাহ বাবর সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে জানান, লাদেনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর আগেও তাঁর মাথার দাম ২ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার ঘোষণা করেছিল আমেরিকা।

Advertisement

লাহৌর হাইকোর্টের নির্দেশে গত ২৪ নভেম্বর গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি পান হাফিজ। এমএমএল-এর হয়ে আগামী বছর পাকিস্তানের ভোটে লড়ার কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। কিন্তু গত ১১ নভেম্বর এমএমএল-এর রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিয়েছে পাক নির্বাচন কমিশন। আদালতে কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন এমএমএল। তাদের পিটিশন খারিজ করে দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছে পাক সরকার। আদালতে পেশ করা লিখিত আর্জিতে পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, এমএমএল নিষিদ্ধ লস্কর এবং জামাতের শাখা। সেই কারণে সরকার এই সংগঠনটিকে রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি দেওয়ার বিরুদ্ধে। নিরাপত্তা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতেই আদালতে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক। নিরাপত্তা সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, এমএমএল রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পেলে রাজনীতিতে হিংসা এবং সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দেবে। পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মতে, এমএমএল লস্কর বা জামাতের থেকে ভিন্ন পথে চলবে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। নিরাপত্তা সংস্থাও সুপারিশ করেছে, এমএমএল রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পেলে হিংসা ছড়াবে। সেই কারণে এমএমএল-কে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার বিরোধী সরকার। পাকিস্তানের ২০০২ সালের রাজনৈতিক দল সংক্রান্ত নির্দেশেও বলা হয়েছে, যে সব সংগঠনের কাজকর্ম মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী, পাক ঐক্য ও সংহতির পক্ষে ক্ষতিকর, যারা ঘৃণা ছড়ায়, জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম বহন করে এবং তাদের সদস্যদের সামরিক-আধাসামরিক প্রশিক্ষণ দেয়, সেই সব সংগঠন রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পাওয়ার অযোগ্য। সূত্রের খবর, পাক সেনার সাহায্যে হাফিজও নিজের বাহিনী তৈরির কাজ শুরু করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন