সিরিয়ায় রাসায়নিক হানায় মৃত্যু ৮০ জনের

রাসায়নিক হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই পূর্ব গুটায় রবিবার ফের বিমান হানাও হয়েছে। সিরিয়ার শাসক গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের শেষ দল জৈশ আল ইসলামের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি থাকলেও হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। 

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

দামাস্কাস শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪০
Share:

দুমার এক হাসপাতালে চলছে শিশুদের চিকিৎসা। ছবি: এ পি।

ফের রাসায়নিক হামলার অভিযোগ উঠল সিরিয়ায়। দামাস্কারের পূর্বে বিদ্রোহী-অধ্যুষিত দুমা শহরতলি এলাকায় শনিবার রাতের ওই হামলায় ৮০ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন বলে খবর মিলেছে। এ বারেও মৃতদের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েক জন শিশু। রাসায়নিক হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই পূর্ব গুটায় রবিবার ফের বিমান হানাও হয়েছে। সিরিয়ার শাসক গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের শেষ দল জৈশ আল ইসলামের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি থাকলেও হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

রবিবার একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, সকাল থেকেই চোখে জ্বালা এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে এলাকার বাসিন্দারা একের পর এক এসে ভিড় করেছেন হাসপাতালে। অন্তত ৫০০ জন। চিকিৎসকদের দাবি, রাসায়নিক হামলার জন্যই এমন অবস্থা। সিরিয়া আমেরিকান মেডিক্যাল সোসাইটির দাবি, শনিবার রাতেই মারা গিয়েছেন ৪৯ জন। অসমর্থিত সূত্রে দাবি, মৃতের মোট সংখ্যাটা ১৫০ বা তারও বেশি হতে পারে। সিরিয়ায় কর্মরত সমাজকর্মীদের তোলা ভিডিয়ো থেকে ফিরে এসেছে অতীতের সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য। শিশু, মহিলা, পুরুষ কাতারে কাতারে পড়ে রয়েছেন। একটি কণ্ঠস্বর দাবি করছে, ‘‘এখানে ভয়ানক ঝাঁঝালো গন্ধ।’’ ক্লোরিন গ্যাসের গন্ধের কথা বলেছেন আক্রান্তরাও।

চিকিৎসকরা এই হামলার দায় চাপিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ওপরেই। গোটা ঘটনায় সরব আন্তর্জাতিক সব গোষ্ঠী। ব্রিটিশ বিদেশ দফতর অবিলম্বে এর তদন্তের ডাক দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, রাসায়নিক হামলার অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তা হলে আরও এক বার আসাদের নিষ্ঠুরতার প্রমাণ মিলবে। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, বেশির ভাগ লোক দমবন্ধ হয়ে নিজেদের বাড়িতেই মারা গিয়েছেন। যদিও সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম রাসায়নিক হামলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, কোণঠাসা হয়ে পড়ায় দুমার বিদ্রোহী গোষ্ঠী জাল ভিডিয়ো ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে। রাসায়নিক হামলার অভিযোগ মানতে চায়নি আসাদের মিত্র দেশ রাশিয়াও।

Advertisement

দুমায় ঠিক কী ঘটেছে, তা ঠিকমতো জানতে পারছে না কেউই। এই এলাকাটি সিরিয়া সরকার এমন ভাবে ঘিরে রেখেছে যে বাইরের সাংবাদিক, ত্রাণকর্মী বা তদন্তকারী— কেউই ঢুকতে পারেননি। তবে মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, এই হামলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্কট বাড়বে। কারণ গত বছর এই রকম ক্লোরিন গ্যাস হামলার পরে ট্রাম্প সিরিয়ার বিমানঘাঁটিতে সেনা হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি বলেছিলেন, সিরিয়া থেকে সেনা সরিয়ে নিতে চান। ফের রাসায়নিক হামলার অভিযোগ ওঠায় তৈরি হয়েছে জটিলতা। ট্রাম্প এ দিন টুইটে আসাদকে ‘পশু’ বলে সম্বোধন করেছেন। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র হেদার নওয়ার্ট বলেছেন, ‘‘এ বারের হামলার রিপোর্ট যদি নিশ্চিত হয়, তা হলে তা ভয়াবহ।’’

পূর্ব গুটার ৯৫ শতাংশ এলাকা নিয়ে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা হয়ে গেলেও দুমাই একমাত্র এখনও বিদ্রোহীদের হাতে রয়েছে। তাই সিরিয়া প্রশাসন এই অঞ্চল পুনর্দখলে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন