প্রবাসের দুঃখ একেবারে ভুলিয়ে দেয় এই দিনগুলো

আমার শহর দার্মস্টাটে খুব কম সংখ্যক বাঙালি থাকেন।

Advertisement

হিয়া মণ্ডল

দার্মস্টাট, জার্মানি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৪৩
Share:

ফ্রাঙ্কফুর্টের সুসজ্জিত দুর্গা প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র

দুর্গাপুজো প্রত্যেক বাঙালির জীবনে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে থাকে। সকলে বছরের এই চার-পাঁচটা দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। পরিবার-পরিজনের সাথে দেখা করা, নতুন জামা পরে ঠাকুর দেখা, খাওয়াদাওয়া, আরও কত কী! সমস্ত দুঃখ ভুলে থাকার সব রসদ যেন ওই কয়েকটা দিন থেকে পাওয়া যায়। এখানে কলকাতার উন্মাদনা না-থাকলেও প্রবাসে সেই আনন্দটা খোঁজার চেষ্টা করি সকলে মিলে।

Advertisement

আমার শহর দার্মস্টাটে খুব কম সংখ্যক বাঙালি থাকেন। কাছের পুজো বলতে ফ্রাঙ্কফুর্টের একটি বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের পুজো। ওখানেই যাই প্রতি বছর। ফ্রাঙ্কফুর্টে প্রতিমা, অডিটোরিয়াম, পুজো সামগ্রীর জোগাড়, খাওয়ার ব্যবস্থা, সবই আয়োজন করা হয় অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে। প্রতিমা কুমোরটুলি থেকেই আসে। এখানে প্রতিমা ভাসান দেওয়া নিয়মবিরুদ্ধ, তাই একই প্রতিমায় পুজো হয় বেশ কয়েক বছর।

সবাই তো আর এ দেশে পুজোর কয়েকটা দিন অফিসে ছুটি পান না। তবু পুজো হয় তিথি মেনেই, নিয়ম করে পালন করা হয় পুজোর সমস্ত আচার অনুষ্ঠান। এই চার দিন অডিটোরিয়ামের ভিতরটা যেন ছোট্ট কলকাতা। সবাই বাংলায় কথা বলছেন। মেয়েদের পরণে শাড়ি বা অন্য কোনও ভারতীয় পোশাক। ছেলেরা পরেছেন পাজামা-পাঞ্জাবি, কেউ বা সাহস করে ধুতি। কচিকাঁচাদের সাজের বাহারও দেখার মতো!

Advertisement

এখনাকার পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল দু’বাংলার সমন্বয়। এ-পার বাংলা আর ও-পার বাংলা মিলেমিশে একাকার। আত্মীয়স্বজনের সান্নিধ্য না-পেলেও অনেকগুলো চেনা মুখকে পাওয়া যায়। সঙ্গে থাকে ধুনোর গন্ধ, ঢাকের তাল, মন্ত্রোচ্চারণ, নতুন শাড়ি পরে অঞ্জলি দেওয়া, সন্ধেবেলার বিবিধ অনুষ্ঠান, আর এক সঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া। কোনও বিদেশি পদ নয়, খাঁটি বাঙালি রান্না। ভোজনবিলাসী বাঙালির যে কোনো অনুষ্ঠানই তো তা না হলে অসম্পূর্ণ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন