Elon Musk

সরকারের ১ লক্ষ কোটি বাঁচিয়ে পদ ছাড়ছেন মাস্ক

মাস্ক জানিয়েছেন, মে মাসে পদত্যাগ করবেন তিনি। এমন সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ৫৪ বছর বয়সি ধনকবুরে জানান, লক্ষ্য প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ০৮:২৯
Share:

ইলন মাস্ক। —ফাইল চিত্র।

কাজ প্রায় শেষ। এ বার তাঁর ‘ছুটি’। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন সংসারের খরচ ১ লক্ষ কোটি ডলার কমানোর পরে, অসংখ্য কর্মী-ছাঁটাইয়ের পরে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (ডিওজিই) ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সরকারি দফতরের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তৈরি করা এই বিভাগটির শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক করেছেন তিনি। মাস্ক জানান, গত কয়েক মাসে তাঁর বিভাগ কী কী কাজ করেছে, সেই সাফল্য নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়েছে।

জানুয়ারি মাসে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে বসার পরে ডিওজিই বিভাগটির সূচনা করা হয়। এর মাথায় বসানো হয় মাস্ককে। সরকারি দফতরের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তৈরি করা হলেও গত কয়েক মাসে ‘অদক্ষ’ কর্মী ছাঁটাই ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ বিভাগগুলি বন্ধ করতেই দেখা গিয়েছে। এ দিন মাস্ক জানিয়েছেন, মে মাসে পদত্যাগ করবেন তিনি। এমন সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ৫৪ বছর বয়সি ধনকবুরে জানান, লক্ষ্য প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। আত্মবিশ্বাসী মাস্ক আরও বলেছেন, মাত্র ১৩০ দিনে সরকারের বার্ষিক আয় ও ব্যয়ের ব্যবধানের ঘাটতি অর্ধেক করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘গড়ে এক দিনে ৪০০ কোটি ডলার সাশ্রয়... এ ভাবে প্রতি দিন, এক সপ্তাহের সাত দিন।” তাঁর দাবি, জানুয়ারি মাসে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর থেকে এ পর্যন্ত আমেরিকা সরকারের ১ লক্ষ কোটি ডলার খরচ কমিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি একটি আমেরিকান টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেছেন, সরকারের খরচ ৭ লক্ষ কোটি ডলার থেকে কমিয়ে ৬ লক্ষ কোটি ডলারে নামিয়ে এনেছে তাঁর দল। ১ লক্ষ কোটি ডলার সাশ্রয়। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এবং সেই সঙ্গে ট্রাম্পের ‘বিশেষ সরকারি আধিকারিক’ মাস্ক বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস সময়ের মধ্যেই আমরা বাজেট ঘাটতি কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে ফেলব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সরকার একেবারেই দক্ষ নয়। প্রচুর অর্থ নষ্ট হয়েছে। সেই সঙ্গে জালিয়াতি। তাই আমরা নিশ্চিত, ব্যয় ১৫ শতাংশ কমানোয় গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পরিষেবাগুলি কোনও ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’’

ডিওজিই প্রধান আরও জানিয়েছেন, কর্মী ছাঁটাই, সম্পত্তি বিক্রয় ও চুক্তি বাতিল-সহ বিবিধ কাজে আমেরিকান করদাতাদের আনুমানিক ১১,৫০০ কোটি ডলার বাঁচিয়েছেন তাঁরা। মাস্ক বলেন, ‘‘মানুষ যে সব গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পরিষেবার উপরে নির্ভরশীল, সেগুলি ঠিকই চলবে। অসাধারণ একটি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। সেই লক্ষ্যে পৌঁছনোর পথে কি আমাদের অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হবে? হ্যাঁ, অবশ্যই।’’

মাস্ক আরও বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হল দিন প্রতি ৪০০ কোটি ডলার, এ ভাব সাত দিন অর্থের অপচয় ও জালিয়াতি আটকানো। এখনও পর্যন্ত আমরা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছি। এই সাফল্য না-মিললে আমেরিকার জাহাজ ডুবে যেত। আর সেটা আটকাতেই আমরা এই কাজ করছি।’’

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গত কাল কংগ্রেসের সামনে জানিয়েছে যে তারা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক দফতর (ইউ এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, সংক্ষেপে ইউএসএড)-এর প্রায় সব কাজ বন্ধ করে দেবে। ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত মায়ানমারকে আর্থিক সাহায্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েও এই ঘোষণা করেছে তারা। গত মাসে ইউএসএড-এর দু’হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এ দিন ট্রাম্প সরকার যা ইঙ্গিত দিয়েছে, তা হল বাকিদেরও কাজ থাকবে না। ইতিমধ্যেই হাজার হাজার কর্মী, তাদের বিদেশ বিভাগে কর্মরত আধিকারিকদের বিভাগীয় মেমো ধরিয়ে জানানো হয়েছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর মাস থেকে কাজ থাকবে না। মানবিক সাহায্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের আক্ষেপ, ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যে ইউএসএড বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নানা বিপর্যয়ে মানুষের জীবন বাঁচিয়ে চলেছে। তার এই পরিণতিতে বহু প্রাণহানি অবশ্যম্ভাবী। সংবাদ সংস্থা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন