ইমানুয়েল মাকরঁ। ছবি: সংগৃহীত।
জ্বালানির লাগামছাড়া দামের বিরুদ্ধে ফ্রান্সে বিক্ষোভের শুরুটা হয়েছিল রাস্তা আটকে। ‘মাকরঁ দূর হটো’— প্যারিসের রাস্তায় এমন দু’-একটা পোস্টারও চোখে পড়েছিল প্রথম দিকে। কিন্তু দু’সপ্তাহের মধ্যেই সেই ‘ইয়েলো ভেস্ট’ প্রতিবাদ যে ভাবে মারমুখী হয়ে উঠেছে, তাতে কপালে ভাঁজ প্রশাসনের। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ আজ নিজে রাস্তায় নেমে দেখলেন, যত্রতত্র গাড়ি পুড়ে ছাই।
লুটপাটের পরে বেআব্রু দোকানপাট। দেওয়ালে-দেওয়ালে সরকার-বিরোধী স্লোগান। আর ‘আর্ক দ্য ত্রিয়োম্ফ’-এ দেশের প্রতীক এক দেবীমূর্তির ডান দিকের ডান দিকে চোখ ও কপাল উপড়ে নিয়েছে কারা। তবু এখনই জরুরি অবস্থা জারি করার কথা ভাবা হচ্ছে না, জানাল মাকরঁর মন্ত্রিসভা।
আর্জেন্টিনায় জি-২০ বৈঠক সেরে গত কালই প্যারিসে ফিরেছেন মাকরঁ। তার পরেই তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। এ দিকে, কয়েক দিন ধরেই দেশের পুলিশ সংগঠনগুলি সরকারের কাছে চিঠি পাঠাচ্ছে— বিক্ষোভ ঠেকাতে এখনই তাদের হাতে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়া হোক। তাই ২০০৫ এবং ২০১৫-র মতো দেশে ফের জরুরি অবস্থা জারি হতে পারে বলে সরকারি সূত্রেই খবর পাওয়া গিয়েছিল। তবে আজ অভ্যন্তরীণ
প্রতিমন্ত্রী লরেঁ নুনেজ় সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বিকল্প হিসেবে জরুরি অবস্থার কথা ভাবা হয়েছিল বটে, কিন্তু এখনই সেটা কার্যকর করা হচ্ছে না।’’
যদিও সদ্য পাশ হওয়া নিরাপত্তা আইনে, মানুষ প্রকাশ্যে কোথাও জোটবদ্ধ হচ্ছে দেখলেই সক্রিয় পদক্ষেপ করছে পুলিশ। পর-পর তিনটে শনিবার ‘ইয়েলো ভেস্ট’-এর আগ্রাসন দেখার পরে এ বার কি পরেরটা নিষিদ্ধ করা হবে? নুনেজ় বলেন, ‘‘মারমুখী বিক্ষোভ হলে তা আটকানোর চেষ্টা আমরা করবই। গত শনিবার প্রতিবাদের জ্যাকেট পরে কিছু লোক যেন খুন করতেই রাস্তায় নেমেছিল। এটা হতে দেওয়া যায় না।’’
সমাধানসূত্র পেতে মাকরঁ তাই এ বার দেশের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছেন। কূটনীতিক শিবিরের একাংশ বলছেন, গত কয়েক মাসে মাকরঁর জনপ্রিয়তা ভয়ানক কমে গিয়েছে। তাই বেগতিক দেখেই সমঝে চলতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট। জরুরি অবস্থা নিয়ে নিজে কিছুই বলছেন না। কাল শুধু টুইট করে জানিয়েছেন, ‘‘প্রতিবাদকে আমি সম্মান করি। বিরোধীদের কথা শুনতেও আমি সব সময় তৈরি। কিন্তু বিক্ষোভ-প্রতিবাদের নামে হিংসা কোনও ভাবেই মেনে নেব না।’’