COVID-19

ডেল্টা স্ট্রেনে সংক্রমণ-ভয় বাড়ছে চিনে

ব্রিটেন, ব্রাজ়িলও ডেল্টা স্ট্রেনে একই ধরনের উপসর্গের কথা জানিয়েছে। তবে তার ক্ষতি করার মাত্রা কতটা, তা স্পষ্ট করেনি কেউই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

উহান শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২১ ০৫:১৬
Share:

ফাইল চিত্র

করোনা সংক্রমণ প্রায় নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলেছিল তারা। নতুন করে কোভিডের ডেল্টা স্ট্রেনের আতঙ্ক বাড়ছে চিনে।

Advertisement

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চিনের উহানে প্রথম করোনা সংক্রমণের খবর শোনা যায়। তার পর একে একে বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। চিনে সর্বপ্রথম ভাইরাসটি ধরা পড়লেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে দ্রুত। ক্ষতির পরিমাণও অন্যদের থেকে কম। বর্তমানে গোটা বিশ্বের সংক্রমণ তালিকায় ৯৯ নম্বরে রয়েছে চিন। মোট সংক্রমিত ৯১,৪৫১। মোট মৃতের সংখ্যা ৪,৬৩৬! আমেরিকা-ভারতে যেখানে এক সময়ে এক দিনে হাজার চারেক মৃত্যু হয়েছে।

কিন্তু নতুন করে চিনে ফের পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব চিনে। কারণ— ডেল্টা স্ট্রেন। চিনের সরকারি টিভি চ্যানেলে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নতুন সংক্রমণের উপসর্গ আগের চেয়ে আলাদা। আগের থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্করও। সংক্রমিতেরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দ্রুত অবস্থার অবনতি ঘটছে। পাঁচ জনের মধ্যে চার জনেরই জ্বর হচ্ছে। সংক্রমিতের শরীরে ভাইরাসের সংখ্যা (ভাইরাস কনসেন্ট্রেশন) আগের চেয়ে বেশি। চিকিৎসায় রোগী সাড়া দিচ্ছেন ধীরে ধীরে। ভাইরাস-মুক্ত হতে সময় লাগছে অনেক বেশি।

Advertisement

গুয়াংঝোউ শহরের সুন ইয়াৎ-সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক্রিটিকাল কেয়ার মেডিসিন’ বিভাগের ডিরেক্টর গুয়ান শিয়াংডং জানান, ১২ শতাংশ রোগীরই দেখা যাচ্ছে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে বাড়াবাড়ি অবস্থা হচ্ছে।

ব্রিটেন, ব্রাজ়িলও ডেল্টা স্ট্রেনে একই ধরনের উপসর্গের কথা জানিয়েছে। তবে তার ক্ষতি করার মাত্রা কতটা, তা স্পষ্ট করেনি কেউই। ২১ জুন লকডাউন সম্পূর্ণ ভাবে তুলে দেওয়ার কথা ভেবেছিল ব্রিটেন। কিন্তু ডেল্টা স্ট্রেনের ভয়ে লকডাউন আরও এক মাস বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। ডেল্টা স্ট্রেনের জেরে ভারতের পরিস্থিতি দেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) গত মাসে এটিকে ‘ভ্যারিয়্যান্ট অব কনসার্ন’ তকমা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এটি অনেক বেশি উদ্বেগের।

চিনে ডেল্টা স্ট্রেনকে ঘিরে আতঙ্কের কথা শোনা গেলেও কত জন সংক্রমিত হয়েছেন, তা জানা যায়নি। এই স্ট্রেনে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়েছে কি না, তা-ও অজানা। এমনকি ডেল্টা স্ট্রেন রুখতে চিনা টিকা কতটা কার্যকর, টিকা নেওয়া কেউ সংক্রমিত হয়েছেন কি না, সে নিয়েও কিছু বলেনি বেজিং। তবে চিনা কোভিড টিকা নেওয়ার পরে সংক্রমিত হওয়ার খবর বাড়ছে বিদেশে।

আমেরিকান জীবপ্রযুক্তি সংস্থা ‘নোভাভ্যাক্স’-এর তৈরি কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে আশা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞেরা। আজ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা দাবি করেছে, করোনার মিউট্যান্ট স্ট্রেনগুলিকেও আটকে দিচ্ছে এই টিকা। কার্যকারিতা ৯০ শতাংশেরও বেশি। একটি বিবৃতি দিয়ে নোভাভ্যাক্স জানিয়েছে— ‘‘মাঝারি ও গুরুতর সংক্রমণেও এটি ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা দিচ্ছে। সব মিলিয়ে কার্যকারিতা ৯০.৪ শতাংশ।’’ তারা আরও জানিয়েছে, আমেরিকা ও মেক্সিকোর ১১৯টি জায়গায় ২৯,৯৬০ জনের শরীরে এই টিকার ট্রায়াল হয়েছিল। সাফল্য মিলতে স্থির হয়েছে জুলাই-সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের টিকা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন জানানো হবে। ভারতেও ‘কোভোভ্যাক্স’ নামে এর ট্রায়াল চালাচ্ছে সিরাম ইনস্টিটিউট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন