International News

ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপে সেই বিশাল প্রাণী কী জানালেন বিজ্ঞানীরা

ঘটনাটি ঘটেছিল ইন্দোনেশিয়ার সেরাম দ্বীপে। গত বুধবার এখানেই হঠাৎ বিরাট পাথরের মতো এক প্রাণীর দেহ জলের উপর ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। যে জায়গায় প্রাণীটিকে দেখা গিয়েছিল, সেখানকার জল ছিল টকটকে লাল। স্থানীয় আসরুল তুয়ানাকোটা নামে এক মৎসজীবী প্রথম দেখেন প্রাণীটিকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ১৮:১৬
Share:

ইন্দোনেশিয়ার তীরে ভেসে আসা সেই বেলিন তিমি। ছবি: ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে

ঘটনাটি ঘটেছিল ইন্দোনেশিয়ার সেরাম দ্বীপে। গত বুধবার এখানেই হঠাৎ বিরাট পাথরের মতো এক প্রাণীর দেহ জলের উপর ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। যে জায়গায় প্রাণীটিকে দেখা গিয়েছিল, সেখানকার জল ছিল টকটকে লাল। স্থানীয় আসরুল তুয়ানাকোটা নামে এক মৎসজীবী প্রথম দেখেন প্রাণীটিকে। তিনিই ডেকে বিষয়টা দেখান বাকিদের। প্রাথমিক ভাবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, প্রাণীটি বিশালাকার একটি স্কুইড।

Advertisement

সম্প্রতি ওসন কনজারভেন্সি-র প্রধান বিজ্ঞানী জর্জ লিওনার্ড জানিয়েছেন, ৫০ ফুট লম্বা, ৪ মিটার চওড়া এবং ৩৫ টন ওজনের বিশাল প্রাণীটি আসলে একটি বেলিন তিমি। কোনও কারণে গুরুতর জখম হয়েছিল সেটি। রক্তক্ষরণ হচ্ছিল তার দেহ থেকে। ফলে রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল সমুদ্রের জল। মৃত অবস্থায় তীরে ভেসে আসে সে। পচন ধরে যাওয়ায় তিমির দেহে বিকৃতিও শুরু হয়ে গিয়েছিল। পচে যাওয়া শরীর গ্যাসে ভরে গিয়েছিল।

দেখুন সেই ভিডিও

Advertisement

সেরাম দ্বীপটি মালুকু দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড় দ্বীপ। বছরের এই সময়টা বেলিন তিমিদের মাইগ্রেশনের সময়। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সেরাম দ্বীপ সংলগ্ন অঞ্চল দিয়ে যাওয়ার সময় সম্ভবত অতিরিক্ত গরম জলের সংস্পর্শে এসে মৃত্যু হয়েছিল মূলত ঠান্ডা জলে থাকা বিশালাকায় তিমিটির। জাহাজে আঘাত লেগে মৃত্যুর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা।

• আগে হোয়েলবোন তিমি নামে পরিচিত ছিল এই তিমি।

• সারা বিশ্বে বেলিন তিমির মোট ১৫টি প্রজাতি রয়েছে।

• সারা বিশ্বে পাওয়া গেলেও উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর ঠান্ডা জলেই এদের দেখা মেলে বেশি।

• এরা লম্বায় মোটামুটি ২০ ফুট এবং ওজনে তিন হাজার কিলোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে।

• ‘ডাইমরফিক’ (দ্বিরূপী যৌন স্বভাব) বৈশিষ্ট্য থাকে এদের।

• অন্য তিমিদের তুলনায় অনেকটাই দ্রুত গতিতে, ঘণ্টায় ৩৭ কিলোমিটার পর্যন্ত সাঁতার কাটতে পারে এরা।

• এদের ত্বকের নীচের স্তরে চর্বির একটি আস্তরণ থাকে। যাকে ‘ব্লাবার’ বলা হয়। চরম ঠান্ডাতেও এই ব্লাবারই এদের শরীর গরম রাখে।

• ফ্লিপারের সাহায্যে খাদ্য গ্রহণ করে বেলিন তিমি।

• মাংস এবং তেলের জন্য একটা সময় প্রচুর পরিমাণে শিকার করা হত বেলিন তিমি।

• অত্যাধিক শিকার, সামুদ্রিক দূষণ এবং সমুদ্রে অ্যাসিডিফিকেশনের কারণে বর্তমানে বিপন্ন তিমির এই প্রজাতি।

গবেষকরা জানাচ্ছেন, তিমি মারা গেলে সাধারণত সমুদ্রের একেবারে নীচে চলে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে মৃত্যুর পর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে তিমিটির দেহে পচন গ্যাস জমা হয়েছিল। ফলে অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে গিয়েছিল সেটি। আর এই কারণেই জলের ওপর ভেসে ওঠে তিমিটির দেহ।

পচে যাওয়া তিমির দেহ থেকে মারাত্মক দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। তা থেকে স্থানীয় এলাকায় সংক্রমণের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাই তিমির দেহটি দ্রুত সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন গ্রামবাসীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন