দক্ষিণ কোরিয়ার হাসপাতাল জতুগৃহ, মৃত বহু

রাস্তার ধারে ছ’তলা হাসপাতাল বাড়িটা থেকে তখন গলগল করে বেরিয়ে আসছে ধোঁয়া। দাউদাউ জ্বলছে হাসপাতালের মূল প্রবেশপথ। সেই জতুগৃহে আটকে পড়া কয়েকশো মানুষের আর্তনাদ আর কান্নার শব্দেই শুক্রবার ঘুম ভাঙল দক্ষিণ কোরিয়ার মিরিয়াং শহরের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সোল শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৩
Share:

রাস্তার ধারে ছ’তলা হাসপাতাল বাড়িটা থেকে তখন গলগল করে বেরিয়ে আসছে ধোঁয়া। দাউদাউ জ্বলছে হাসপাতালের মূল প্রবেশপথ। সেই জতুগৃহে আটকে পড়া কয়েকশো মানুষের আর্তনাদ আর কান্নার শব্দেই শুক্রবার ঘুম ভাঙল দক্ষিণ কোরিয়ার মিরিয়াং শহরের। এ দিন স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ আগুন লাগে মিরিয়াংয়ের সেজং হাসপাতালে।

Advertisement

ওই অগ্নিকাণ্ডের জেরে মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের।

তবে মৃতের সঠিক সংখ্যা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ প্রথমে জানালেও, পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মিরিয়াংয়ের প্রশাসন জানায়, মৃতের সংখ্যা ৩৭। এই তালিকায় এক চিকিৎসক ও দুই নার্সও রয়েছেন। তবে আগুনে পুড়ে নয়, ধোঁয়ায় দম আটকেই এঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আহতের সংখ্যা ১৪০ ছাড়িয়েছে। শহরের অন্য ১৫টি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

Advertisement

রাতের ডিউটি সেরে প্রতিদিনের মতো সেজং হাসপাতালের সামনে দিয়েই বাড়ি ফিরছিলেন বছর পঁচিশের তরুণ উয়ো ইয়ুং মিন। জানালেন, হাসপাতালের মূল প্রবেশপথে আগুন লাগায় উপরের তলার কেউই বেরোতে পারছিলেন না। প্রাণ বাঁচাতে জানলা থেকে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টাও করেন কয়েক জন। জানলার বাইরে মই আর প্লাস্টিকের চাদর লাগিয়ে তাঁদের বার করে আনছিলেন উদ্ধারকারীরা। শুধু সেজং নয়, আগুন ছড়ানোর আশঙ্কায় পাশের একটি হাসপাতাল থেকেও বার করে আনা হয় রোগী ও কর্মীদের। মিন বললেন, ‘‘অসহায় মানুষের কান্না শুনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। দমকল কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধে মিলিয়েই উদ্ধারে নেমে পড়লাম। পাঁজাকোলা করে বার করে আনলাম একের পর এক রোগীকে।’’ খবর তত ক্ষণে ছড়িয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। হাসপাতালের বাইরে তখন উদ্বিগ্ন পরিজনদের ভিড়।

পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতালের মূল প্রবেশপথের কাছে এমার্জেন্সি রুমেই প্রথমে আগুন লাগে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে অন্য দিকেও। কী ভাবে আগুন লেগেছে তার সঠিক কারণ অবশ্য জানা যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, এসি মেশিনে বিদ্যুৎবিভ্রাটের জেরেই আগুন ছড়ায়। অভিযোগ, ছ’তলা ওই হাসপাতালে আগুন নেভানোর জন্য ‘স্প্রিঙ্কলার’ ছিল না। ফলে সময় মতো জল ছড়িয়ে আগুন নেভানো যায়নি। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, চলতি আইন অনুযায়ী, ছ’তলা বাড়িতে ‘স্প্রিঙ্কলার’ লাগানো বাধ্যতামূলক নয়।

গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ফিটনেস সেন্টারে আগুন লেগে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এক মাসের মধ্যে ফের একই ধরনের ঘটনায় হাসপাতালের পাশাপাশি আঙুল উঠছে প্রশাসনিক দুর্বলতার দিকেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন