৫৪ বছর পর কিউবায় চালু মার্কিন দূতাবাস

হাভানার আকাশে ফের ডোরাকাটা লাল-সাদা আর নীলে তারকাখচিত পতাকা। আনুষ্ঠানিক ভাবে কিউবায় ফের চালু হচ্ছে মার্কিন দূতাবাস। ৫৪ বছর পর। দূতাবাসের মাথায় পতাকা উত্তোলনে আজই হাভানায় পাড়ি দিয়েছেন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি। দীর্ঘ ৭০ বছর পর। কিউবার মাটিতে ফের কোনও মার্কিন বিদেশসচিব। আর এই পতাকার মরসুমেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৫ ০২:৪১
Share:

Advertisement

Advertisement

হাভানার আকাশে ফের ডোরাকাটা লাল-সাদা আর নীলে তারকাখচিত পতাকা। আনুষ্ঠানিক ভাবে কিউবায় ফের চালু হচ্ছে মার্কিন দূতাবাস। ৫৪ বছর পর। দূতাবাসের মাথায় পতাকা উত্তোলনে আজই হাভানায় পাড়ি দিয়েছেন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি। দীর্ঘ ৭০ বছর পর। কিউবার মাটিতে ফের কোনও মার্কিন বিদেশসচিব। আর এই পতাকার মরসুমেই।

কিন্তু পতাকা উড়লেও দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের মেরামতি আদৌ সম্ভব কি না, প্রশ্ন উঠছে। সূত্রের খবর, কেরির এই সফরে কিউবার উপর থেকে কিছু আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে। আভাস রয়েছে কিউবায় আমেরিকার বিতর্কিত গুয়ান্তানামো বে-র কয়েদখানা বন্ধ করা নিয়েও। তবু সিঁদুরে মেঘ দেখছেন একাংশ। ভয় দেখাচ্ছে দু’দেশের মধ্যে তিক্ততার দীর্ঘ ইতিহাস।

ভাঙনের শুরুটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকেই। তার পর পাঁচের দশকে মার্কিন-সমর্থিত বাতিস্তা সরকারের বিরুদ্ধে কিউবা যখন বিপ্লবে নামে, কূটনৈতিক পর্যায়ে হাভানার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে ওয়াশিংটন। ১৯৮২-তে সন্ত্রাসে মদতদাতা দেশ হিসেবে সিরিয়া, ইরান, সুদানের মতো কিউবার নামও তালিকায় জুড়ে নেয় আমেরিকা। হাভানায় মার্কিন দূতাবাস গুটিয়ে নেওয়া হয় তারও দু’দশক আগে। কিউবার উপর চাপতে থাকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা। কিউবায় ভ্রমণে ইচ্ছুক মার্কিনদের উপর এখনও বিধিনিষেধ রয়েছে। তিক্ততা তাই ক্রমশ বেড়েছে।

তবু এরই মধ্যে বরফ গলার ইঙ্গিত। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গত ডিসেম্বরে আলোচনায় বসেন কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো। ওয়াশিংটনে কিউবার দূতাবাস চালু হয়েছে মাস খানেক আগেই। এ বার পাল্টা সমঝোতার ইঙ্গিত বারাক ওবামার।

কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোর গলায় অবশ্য এখনও বিপ্লবেরই সুর। শারীরিক কারণে ২০০৬-এ ভাই রাউলকে জায়গা করে দিয়ে রাষ্ট্রীয় পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। গত কালই ৮৯তম জন্মদিন পালন হল ফিদেলের। নেহাতই ঘরোয়া ভাবে। কিছু বামপন্থী বিপ্লবী বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে। নড়বড়ে শরীর, ইদানীং হাতেও জোর পান না ফিদেল। তবু দেশবাসীর উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখলেন জন্মদিনে। হাভানায় মার্কিন দূতাবাস নিয়ে প্রায় কোনও শব্দই খরচ করলেন না। বরং মার্কিন নীতি নিয়ে আগাগোড়া সমালোচনাই করে গেলেন। ওয়াশিংটনের তরফে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কারণেই যে কিউবার কোটি কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে, ফের মনে করিয়ে দিলেন তিনি।

কাস্ত্রোর দেশের উপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা যে এখনই তুলে নেওয়া সম্ভব নয়, মার্কিন কংগ্রেসের চাপে তা বুঝে গিয়েছেন ওবামাও। দরাজ গলায় তাই বিশেষ প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন না তিনি। তবু দু’দেশ থেকেই একটা অংশের মানুষ নতুন স্বপ্নে ভাসছেন। যা কিছুটা আন্দাজ করেই ফিদেল বুঝি বিপ্লবের কলমেই চিঠিতে লিখলেন— ‘‘আমি মার্কিন নীতিতে বিশ্বাসী নই। আলোচনাতেও রাজি নই। তবে এর মানে এই নয় যে, কোনও শান্তিপূর্ণ সমাধানের বদলে যুদ্ধ চাইছি আমি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন