জোড়া দুর্যোগ: বন্যা ব্রিটেনে, টেক্সাসে টর্নেডো

বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি বৈঠক ডাকলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। বন্যার ফলে উত্তর ইংল্যান্ডের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। জারি করা হয়েছে প্রায় একশোটিরও বেশি সতর্কবার্তা। ইয়র্কের আউসি নদী এবং ফস নদী সংলগ্ন প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাড়ির বাসিন্দাকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন ও ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:০৩
Share:

নৌকায় চেপে উত্তর ইংল্যান্ডে উদ্ধারকাজ বিপর্যয় মোকাবিলা দলের। ছবি: এএফপি

বড়দিনের ছুটি কাটতে না কাটতেই প্রকৃতির জোড়া কোপ। বৃষ্টি, ঝড়, বন্যায় বিপর্যস্ত ব্রিটেন ও আমেরিকার একটা বড় অংশ।

Advertisement

বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি বৈঠক ডাকলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। বন্যার ফলে উত্তর ইংল্যান্ডের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। জারি করা হয়েছে প্রায় একশোটিরও বেশি সতর্কবার্তা। ইয়র্কের আউসি নদী এবং ফস নদী সংলগ্ন প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাড়ির বাসিন্দাকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা কবলিত এলাকায় অতিরিক্ত ৫০০ সেনা পাঠানো হয়েছে। রবিবার থেকেই তারা কাজ শুরু করবে। জরুরি বৈঠকের পর আজ পরিবেশ দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার এবং শনিবারও বন্ধ হয়নি বৃষ্টি। ফলে ল্যাঙ্কাশায়ার এবং ইয়র্কশায়ারের নদীগুলি থেকে বিপুল পরিমাণে জল উপচে তীর ভাসিয়ে দিয়েছে। রশডেল এবং লিডসের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাও এখন জলের তলায়।

Advertisement

ফস বেরিয়্যারে ফস নদী মিশেছে আউসি নদীর সঙ্গে। প্রশাসনের কর্তারা আজ জানিয়েছেন, ওই এলাকায় জলস্তর অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার জন্য ফ্লাড গেট খুলে দিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। ফলে ইয়র্ক শহরের বেশ কিছু এলাকা, যা হয়তো সাধারণত বন্যার আওতায় আসার কথা নয়, সেগুলিতেও বন্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে প্রশাসন।

ঝড়ের তাণ্ডবে টেক্সাসের রওলেটে ভেঙেছে বাড়ি। ছবি: এপি

পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের বাসিন্দা ক্যারোল পলিট। বলেছেন, ‘‘সকাল সাতটা নাগাদ প্রথমে সাইরেন শুনতে পাই। নীচে নেমে তড়িঘড়ি আসবাবপত্র এবং কার্পেট সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তার পর সোজা উপরে!’’ কিন্তু দোতলায় গিয়েও রেহাই পাননি ক্যারোল দম্পতি। চোখের সামনেই দেখতে পান কী ভাবে পার্ক, রাস্তার গাড়ি সব একে একে ডুবে যাচ্ছিল। শেষমেশ দোতলার জানলা থেকেই উদ্ধারকারী নৌকোয় উঠে প্রাণে বাঁচেন তাঁরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, উত্তর-পশ্চিম ব্রিটেনের প্রায় আট হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন।

অন্য দিকে, উত্তর টেক্সাসের ডালাসে টর্নেডোর জেরে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। ডালাস পুলিশ জানিয়েছে, গার্ল্যান্ড এলাকাই সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। শনিবার সন্ধেতে ছ’টি টর্নেডো আছড়ে পড়ে টেক্সাসে এবং একটি ওকলাহামায়। টর্নেডোর জেরে উড়ে গিয়েছে বহু গাড়ি। ভেঙে পড়েছে প্রায় ৬০০-রও বেশি বাড়িঘর।

গার্ল্যান্ডেই থাকেন ম্যাক মিলান। টর্নেডোর সময় বাড়িতেই ছিলেন তিনি। মিলান বলেছেন, ‘‘শুধু শুনতে পেলাম ভয়ানক আওয়াজ হচ্ছে বাইরে। ... বাড়ির উল্টো দিকের গির্জাটা দেখলাম পুরো ধসে গিয়েছে। ... বিদ্যুৎ নেই।’’ অনেকেই জানিয়েছেন, রবিবারের অভিজ্ঞতাটা আরও বীভৎস। কোথাও কোথাও বাড়ির দেওয়ালে গর্ত। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলো বাড়ি ভেঙে ঢুকে পড়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেই আশঙ্কা। বাড়তে পারে ঠান্ডা। এমনকী বৃষ্টি, তুষারপাত হওয়ারও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এই সংক্রান্ত আরও খবর...

ঝড়বৃষ্টিতে কাবু ব্রিটেনে বন্যার ভ্রুকুটি, মৃত ৬

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন