USA

‘টুইনডেমিক’! আমেরিকায় আতঙ্ক ফ্ল‌ুরও

হাসপাতালের শয্যা উপচে পড়ছে। চিকিৎসা সামগ্রীরও অভাব দেখা দিচ্ছে ধীরে ধীরে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:১৪
Share:

খুলে গেল প্রি-স্কুল। করোনা-পরিস্থিতিতে এত দিন বন্ধ ছিল। মাস্ক পরে মায়ের হাত ধরে স্কুলের পথে খুদেরা। সোমবার নিউ ইয়র্কে। রয়টার্স

গ্রীষ্ম বিদায় নেওয়ার পালা। সামনে শীত আসছে। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর, মাঝের এই সময়টাকে মার্কিন মুলুকে ‘ফ্ল‌ু’ না বলে ‘ফ্ল‌ু সিজ়ন’ও বলা হয়। এমনিতেই করোনা-পরিস্থিতিতে নাজেহাল আমেরিকা। কোভিড-১৯-এ দু’লাখের উপরে মৃত্যু। এর সঙ্গে আবার ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু-এর জোড়া ফলায় পর্যুদস্ত চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘টুইনডেমিক সিচুয়েশন’।

Advertisement

হাসপাতালের শয্যা উপচে পড়ছে। চিকিৎসা সামগ্রীরও অভাব দেখা দিচ্ছে ধীরে ধীরে। স্বাস্থ্যকর্মীরা ওভারটাইম করতে-করতে ক্লান্ত। এ অবস্থায় আমেরিকায় দৈনিক করোনা-সংক্রমণ সামান্য কমেছে কি কমেনি, ফ্লু এসে হাজির। মার্কিন চিকিৎসকেরা আগাম ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বাসিন্দাদের। তবে এ-ও জানাচ্ছেন, কোভিড-১৯ রুখতে ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন কোনও কাজ দেবে না। শুধু ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ আটকাবে। তাতে এক সঙ্গে যে ‘দুই অতিমারি’ পরিস্থিতি গ্রাস করছে, তা অনেকাংশে রোখা যাবে। চিকিৎসকদের কথায়, ‘‘সব চেয়ে আতঙ্কের হল, কোভিড-১৯ এবং ফ্লু-এর উপসর্গ প্রায় একই রকম। রোগী দেখে কী হয়েছে বলা মুশকিল হচ্ছে।’’

সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, লোকে বলতে পারছেন না, কিসের অসুস্থতা। দুই রোগেরই সাধারণ উপসর্গ হল জ্বর, সর্দিকাশি, প্রবল ঠান্ডা লাগা এবং শ্বাস নিতে কষ্ট। তফাত যেটুকু— কোভিডে গন্ধ, স্বাদের মতো অনুভূতি চলে যায়। কিন্তু করোনা-আক্রান্ত সকলেরই যে আবার স্বাদ-গন্ধ চলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, তেমনটা নয়। আবার ফ্লু-তেও অনেক সময় ঠান্ডা লেগে নাক বন্ধ হয়ে যায়, জিভের স্বাদ চলে যায়! অতএব করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট না-পাওয়া পর্যন্ত রোগ বোঝাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে চিকিৎসকদের পক্ষে। আবার ফ্লু এবং কোভিড-১৯, দুই রোগ এক সঙ্গে হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞেরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: কোভিড যুদ্ধে প্রশ্ন সরকারি ‘সাফল্যের’ যথার্থতা নিয়ে

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের ডিরেক্টর গ্যারি সিমন বলেন, ‘‘এ বছরটা ভয়ানক কঠিন হতে চলেছে। হয় ফ্লু, না-হলে করোনা।’’ তবে বিশেষজ্ঞরাই জানাচ্ছেন, করোনার থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা সামলানো তুলনায় সহজ। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে কোভিডের তুলনায় সংক্রমিত হলে দ্রুত উপসর্গ দেখা দেয়। ১ থেকে ৪ দিনের মধ্যেই। রোগ দ্রুত ধরা পড়লে, দ্রুত-চিকিৎসা সম্ভব। তা ছাড়া, উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে পর্যন্ত কোনও ফ্লু-রোগীর থেকে অন্য কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। তার পরে আর সংক্রমণ ঘটে না। করোনা হলে দু’সপ্তাহ বাদেও উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আবার উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১০ দিন বাদেও রোগীর থেকে অন্য কেউ সংক্রমিত হতে পারে। অর্থাৎ কিনা কোভিড-১৯ আরও বেশি সংক্রামক ব্যাধি। যা অবশ্য এত দিনে স্পষ্ট। ৯ মাসে গোটা পৃথিবীতে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটির উপরে মানুষ। শুধু আমেরিকাতেই আজ সংক্রমিতের সংখ্যা ৭০ লক্ষ ছাড়াল। জন্স হপকিন্স হাসপাতালের এপিডেমিয়োলজিস্ট অ্যারন মিলস্টোন বলছেন, ‘‘দরকারে অতিরিক্ত সাবধানী হোন। মনে হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।’’

আরও পড়ুন: তবলিগি জমায়েত থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে: কেন্দ্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন