রাশিয়ায় ইউক্রেনের পাঠানো সেই ড্রোন। ছবি: সংগৃহীত।
দুই দেশের মধ্যে সাড়ে তিন বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। ক্ষয়ক্ষতি দুই দেশেরই হচ্ছে কমবেশি। এর মধ্যে রবিবার ইউক্রেন দাবি করেছে, রাশিয়ার ভিতরে ঢুকে পাঁচটি বিমানঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে থাকা ৪১টি বোমারু বিমান ধ্বংস করেছে তারা। ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়ে নয়, বরং ড্রোন পাঠিয়ে ওই বিমান ধ্বংস করেছে কিভ। যদিও রাশিয়া এই নিয়ে এখন পর্যন্ত মুখ খোলেনি। ইউক্রেন জানিয়েছে, এফপিভি ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা চালিয়েছে তারা। কী এই ড্রোন? কী ভাবে কাজ করে?
এফপিভির অর্থ ‘ফার্স্ট পার্সন ভিউ’। এর সামনে থাকা ক্যামেরা ‘রিয়্যাল টাইম’ ছবি পাঠায় নিয়ন্ত্রককে। যিনি ড্রোন পরিচালনা করছেন, তিনি নিজের সামনে থাকা পর্দায় দেখতে পারবেন কোথায় উড়ছে সেটি। মনে হবে, তিনি নিজেই বসে রয়েছেন সেই ড্রোনের ভিতরে। ভিডিয়ো গেম খেলার সময় যেমন পর্দায় দেখা যায়, সে রকম।
কী ভাবে আক্রমণ করে এই ড্রোন?
আত্মঘাতী ড্রোন হিসাবে এই এফপিভিকে তৈরি করা হয়েছে। তিন স্তরে কাজ করে এটি— এক, প্রথমে ওড়ে। দুই, লক্ষ্যবস্তু (ট্যাঙ্ক, যুদ্ধবিমান, বাড়ি) খুঁজে নেয়। তিন, তার পর সরাসরি লক্ষ্যবস্তুর দিকে ছুটে গিয়ে আঘাত হানে। বিস্ফোরণ ঘটায়। ড্রোনে থাকে গ্রেনেড বা আইইডি। তা দিয়েই বিস্ফোরণ ঘটায় এটি।
কী ভাবে ব্যবহার করেছে ইউক্রেন?
ইউক্রেন নিজেই তৈরি করেছে এই ড্রোন। তা-ও বেশ কম খরচে। ভারতীয় মুদ্রায় এক একটি এফপিভি ড্রোনের দাম ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা। থ্রিডি প্রিন্টিং, মোটর, ক্যামেরা, ব্যাটারির সমন্বয় ঘটিয়ে এই ড্রোনগুলি তৈরি করেছে ইউক্রেন। সূত্রের খবর, ১ জুন শয়ে শয়ে রাশিয়ায় এফপিভি ড্রোন পাঠিয়েছে ইউক্রেন। বায়ুসেনাঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে থাকা বোমারু বিমান লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, এই ধরনের হামলার মোকাবিলা বেশ শক্ত। রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েও এই ড্রোন হামলা আটকাতে পারেনি।
রাশিয়ার পাঁচটি বিমানঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে থাকা যুদ্ধবিমানকে নিশানা করেছে কিভের ড্রোন। এঞ্জেলস এয়ারবেস, শেকোভকা, মোজ়দোক, ইঙ্গোশেতিয়ার সামরিক অঞ্চল, ওরেল এয়ারফিল্ড। এই ঘাঁটিগুলিতে টিইউ-৯৫, টিইউ-২২এম৩ বোমারু বিমান রাখা ছিল। এই বিমানগুলির মাধ্যমে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে মস্কো।
এই ড্রোন কেন বিপজ্জনক?
আকারে ছোট এই ড্রোন আত্মঘাতী হামলা করতে সমর্থ। ‘রিয়্যাল-টাইম’-এ একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রেডারকে ফাঁকি দিতে পারে এই এফপিভি। ক্ষেপণাস্ত্রের থেকে অনেক সস্তা। কিন্তু লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে নির্ভুল ভাবে। সেই আঘাতে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে শত্রুপক্ষ।