(বাঁ দিকে) বন্দুকবাজের হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নিচ্ছেন ফলবিক্রেতা আহমেদ। পরে সেই তিনিই গুলিতে জখম (ডান দিকে)। ছবি: এক্স।
সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকতে বন্দুকধারী আততায়ীকে একা সামলেছিলেন। তা-ও খালি হাতে! ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে সেই ফলবিক্রেতা আহমেদ আল আহমেদ। দীর্ঘ দিন ধরে বন্ডিতে ফল বিক্রি করছেন তিনি। রবিবার আততায়ীদের নির্বিচারে গুলি চালাতে দেখে একাই এগিয়ে যান। পরে অবশ্য তিনি নিজেও গুলি খেয়েছেন। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহমেদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অস্ট্রেলিয়া। খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিস তাঁর বীরত্ব ও সাহসকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। নিউ সাউথ ওয়েল্স প্রদেশের প্রধান ক্রিস মিন্স বলেছেন, ‘‘এই ভিডিয়োয় যা দেখলাম, তার মতো অবিশ্বাস্য দৃশ্য আমি আগে কখনও দেখিনি। আহমেদ সত্যিকারের হিরো। ওঁর সাহসিকতার জন্য আজ বহু মানুষ প্রাণে বেঁচে গেলেন।’’
কী দেখা গিয়েছে ভিডিয়োয়? ৫৭ সেকেন্ডের যে ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে লম্বা বন্দুক দিয়ে একের পর এক গুলি চালাচ্ছেন আততায়ী। তাঁর পরনে কালো পোশাক। ওই গাছের পিছন দিকে সারে সারে গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। গাড়ির পিছন থেকে আচমকা খালি হাতে বন্দুকবাজের দিকে এগিয়ে যান আহমেদ। পিছন থেকে যাওয়ায় বন্দুকবাজ তাঁকে দেখতে পাননি। পিছন থেকে জাপটে ধরে বন্দুকটি কেড়ে নেন আহমেদ। বেশ কিছু ক্ষণ বন্দুকবাজের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি চলে। পরে আততায়ী পালিয়ে যান।
আততায়ীর দিকে বন্দুক তাক করে রেখেছিলেন আহমেদ। নিজে একটিও গুলি চালাননি। অভিযুক্ত নিরস্ত্র অবস্থায় কিছু দূর এগিয়ে গেলে ওই ভিডিয়োতেই দ্বিতীয় বন্দুকবাজকে দেখা যায়। একটি উঁচু জায়গা থেকে গুলি চালাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর গুলিতেই পরে জখম হন আহমেদ।
ঠিক কী ঘটেছিল? রবিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডি সমুদ্রসৈকতে তখন থিকথিকে ভিড়। জড়ো হয়েছেন অন্তত ১০০০ মানুষ। অধিকাংশই ইহুদি। কারণ, বন্ডিতে তখন ইহুদিদের হানুকা উৎসব চলছিল। রবিবারই ছিল উদ্যাপনের প্রথম দিন। সেই ভিড়ে উৎসবের হুল্লোড় খানখান করে দেয় গুলির শব্দ। দু’জন আততায়ীর নির্বিচার গুলিতে মৃত্যু হয় ১৫ জনের। সিডনির পুলিশ জানিয়েছে, আততায়ীরা সম্পর্কে বাবা ও ছেলে। পুলিশের গুলিতে বাবার মৃত্যু হয়েছে। তবে অভিযুক্ত ছেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। উভয়েই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বলে জানা গিয়েছে।