প্রতীকী ছবি।
রোজকার মতোই ফেসবুকে বিভিন্ন নোটিফিকেশন দেখছিলেন সবাই। এক যুবকের ফেসবুক লাইভের সম্প্রচার দেখে ভিরমি খাওয়ার জোগাড় সকলের। কী ছিল সেই ভিডিওতে?
তিনজন যুবক, যাদের প্রত্যেকেরই বয়স ২১ থেকে ২৫-এর মধ্যে তারা মোবাইলের ক্যামেরার সামনে উদ্দাম নাচানাচি জুড়ে দিয়েছে। হঠাৎ দেখা গেল এক মহিলাকে টেনে-হিঁচড়ে, মুখ চেপে একটি ফ্ল্যাটের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়ে গেল তারা। আর তাদের মধ্যেই এক জন বলে উঠল, ‘‘এখন তোমাকে ধর্ষণ করা হবে।’’ এই কথার সঙ্গে সঙ্গেই ওই মহিলার জামাকাপড় টেনে ছিঁড়ে দিল তিন যুবক। হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল ভিডিও সম্প্রচার। যাঁরা এই ভিডিওটি দেখেছিলেন তাঁদের মধ্যেই অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন, খুব কঠিন মজা করা হচ্ছে ওই মহিলার সঙ্গে।
কিন্তু না! তাঁদের ভুল ভাঙল মিনিট কয়েক পরেই। ফের শুরু হল লাইভ ভিডিও। তিন যুবক ঝাঁপিয়ে পড়ল ওই মহিলার উপর। চলল চরম নির্যাতন। আর সেই ঘটনার প্রতিটি মুহূর্ত সম্প্রচারিত হল ফেসবুক লাইভে। ঘটনাটি যখন ঘটেছে অনেকেই তখন, ওই লাইভ ভিডিওর নীচে কমেন্ট দিতে শুরু করেছেন, ‘‘এক্ষুনি এই সব বন্ধ কর। নয়তো আমরা পুলিশের কাছে যাব।’’ কিন্তু কে শোনে কার কথা! ফেসবুক লাইভেই মহিলাকে গণধর্ষণ করল ওই তিন যুবক।
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট বিরোধী বিপুল মিছিল, তবে ট্রাম্পের তোপে সংবাদমাধ্যমই
এমনই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে সুইডেনের আপসালা শহরে। এই ঘটনায় জড়িত তিন ধর্ষণকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সকাল আটটা নাগাদ এই ধরনের ঘটনা ঘটে। ভিডিওটি ফেসবুক সম্প্রচারের পর পরই তাদের আটক করা হয়। ফেসবুকের একটি ক্লোজড গ্রুপে গণধর্ষণের লাইভ ভিডিওটি সম্প্রচারিত হয়। লাইভ ভিডিওটি দেখার পরেই ওই গ্রুপটির এক সদস্য থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এই গোটা ঘটনাটির খবর ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে ওই তিন যুবক মানসিক বিকারগ্রস্ত, নয়তো এই ধরনের ঘটনা কেউ ঘটাতে পারে তা ভাবাই যায় না! ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করা হয়েছে। নির্যাতিতাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগকারিনী এক সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘ফেসবুক লাইভ এখন খুবই জনপ্রিয়। গোটা দুনিয়াকে নিজের সম্পর্কে আপডেট দিতে এর জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু ফেসবুক লাইভে যে এমন ঘটনারও সম্প্রচার কেউ করতে পারে, তা হয়তো না দেখলে বিশ্বাসই করা যায় না! বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে সোশ্যাল মিডিয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর অপব্যবহারও করেন কেউ কেউ। আমি প্রথমে ভিডিওটি দেখে ভেবেছিলাম ওরা হয়তো মজা করছে।’’