উইলেসডেনের হার্লেসডেন রোড। উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের এই ছিমছাম আপাত শান্ত এলাকারই এক বাড়িতে যে একসঙ্গে এতজন সন্দেহভাজন জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি স্থানীয় বাসিন্দারা। কাল সন্ধেয় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের জঙ্গি-দমন বাহিনী এখানকার এক বাড়ি থেকেই ধরে নিয়ে গিয়েছে পাঁচ জনকে। যাদের মধ্যে এক জন আবার নাবালক। পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছে এক তরুণা। ঘটনার আকস্মিকতায় বিস্মিত হার্লসডেন রোড। কেন্ট থেকেও অবশ্য ধরা পড়েছে এক মহিলা।
বছর পঞ্চাশের অ্যালেক্স প্যাটন দীর্ঘদিন হার্লেসডেন রোডের বাসিন্দা। এলাকায় গুলির শব্দে চমকে উঠেছিলেন তিনি। সাংবাদিকদের বললেন, ‘‘কাল আচমকাই গোটা এলাকা পুলিশ ঘিরে ফেলে। তাদের মুখে মুখোশ। হাতে ভারী ভারী আগ্নেয়াস্ত্র। প্রথমটায় বুঝতেই পারিনি কী হতে চলেছে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই বেশ কয়েকটা গুলির শব্দ। চমকে উঠেছিলাম। তার পর ওই বাড়িটা থেকে এক জন মহিলাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যেতে দেখলাম।’’ যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ। তবে প্রতিবেশীদের অনেকেই জানিয়েছেন, হার্লসডেন রোডের ওই বাড়িতে একটি মুসলিম পরিবার থাকত বলেই তাঁরা জানেন। ওই পরিবারের মানুষগুলোই লন্ডনে বড় জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করছিল বলে ভাবতেও পারেননি এলাকার কেউ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনের কথায়, ‘‘ওরা সোমালিয়া থেকে এসেছিল বলে জানতাম।’’ আজও গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। মোতায়েন রয়েছেন বেশ কয়েক জন অফিসারও।
আরও পড়ুন:ঢাকার খেতাবে না রুষ্ট মিরের
কাল সন্ধের জঙ্গি-দমন অভিযান নিয়ে পুলিশ সবিস্তার কিছু না জানালেও দুপুরে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির পরিচয় জানা গিয়েছে আজ। ধৃতের নাম খালিদ ওমর আলি। বছর সাতাশের আলি ব্রিটিশ নাগরিক। কাল লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়ারের কাছে পার্লামেন্ট স্ট্রিটে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ওমরের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’টি বড় ছুরি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে হামলাই তার উদ্দেশ্য ছিল বলে অনুমান পুলিশের। মাসখানেক আগে ঠিক যেমনটা করতে চেয়েছিল ৫২ বছরের জঙ্গি খালিদ মাসুদ।
কাল ওমরের বাড়ির কেউ পুলিশকে ফোন করে তার গতিবিধি জানিয়ে দিয়েছিলেন। সে যে এমন কিছু করতে পারে, সেটা আঁচ করেছিলেন সেই আত্মীয়। ওই ফোন পেয়েই তড়িঘড়ি ওমরকে আটক করে পুলিশ। টটেনহামের স্কুলে পড়া ওমর কেন ওই হামলা চালাতে গিয়েছিল, তার সঙ্গে ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএসের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।