হিমশৈলের দাপটে মৃত দেড় লক্ষ পেঙ্গুইন

সংখ্যায় ওরা ছিল প্রায় এক লাখ ষাট হাজার। আর গত ছ’বছরে মারা গিয়েছে দেড় লক্ষ। অর্থাৎ এখন সর্বসাকুল্যে রয়েছে মোটে দশ হাজার। ওরা অর্থাৎ কুমেরুর কেপ ডেনিসনের কাছে বসবাসকারী পেঙ্গুইন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সিডনি শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:২৭
Share:

সংখ্যায় ওরা ছিল প্রায় এক লাখ ষাট হাজার। আর গত ছ’বছরে মারা গিয়েছে দেড় লক্ষ। অর্থাৎ এখন সর্বসাকুল্যে রয়েছে মোটে দশ হাজার।

Advertisement

ওরা অর্থাৎ কুমেরুর কেপ ডেনিসনের কাছে বসবাসকারী পেঙ্গুইন। প্রাণী বিশেষজ্ঞরা যাদের ডাকেন ‘অ্যাডলি পেঙ্গুইন’ নামেও। মূলত কুমেরুর উপকূলেই দেখা মেলে এদের।

নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির কয়েক জন বিজ্ঞানীর বক্তব্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে ওই এলাকায় আচমকাই ভেসে এসে আটকে যায় একটি বিরাট হিমশৈল। ‘বি ০৯ বি’, হিমশৈলটির এমনই নাম রেখেছেন বিজ্ঞানীরা। তার আয়তন প্রায় রোম শহরের সমান। আর তাতেই ব্যাঘাত ঘটেছে পেঙ্গুইনদের জীবনযাপনে।

Advertisement

এর আগে খোলা জলাশয়ের ধারেই থাকত ওই অ্যাডলি পেঙ্গুইনের দল। তাই খাবারের সন্ধান পেতে তেমন অসুবিধে হতো না ওদের।

তবে এই হিমশৈলটি বদলে দিয়েছে ওদের জীবনযাপন। খাবারের সন্ধানে এখন প্রায় ৭০ মাইল অর্থাৎ প্রায় ১১২ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ ঘুরতে হচ্ছে ওদের।

বিজ্ঞানীদের মতে, ঠিক এই কারণেই পেঙ্গুইনদের সংখ্যাটা কমে আসছে ধীরে ধীরে। কিন্তু গত আট-ন’ মাসে উল্লেখযোগ্য ভাবে ওদের সংখ্যাটা কমে গিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন। তবে এখানেই শেষ নয়। এমন চললে যে আগামী ২০ বছরেই ওই পেঙ্গুইনের দল নির্বংশ হবে, সে সতর্কবার্তাও দিয়ে রেখেছেন বিজ্ঞানীরা। অবশ্য হিমশৈলটি অন্য কোথাও সরে গেলে বা ভেঙে গেলে হয়তো প্রাণে বাঁচতে পারে ওরা।

গত এক শতাব্দী ধরে কেপ ডেনিসনের পেঙ্গুইনদের উপর নজর রাখছেন বিজ্ঞানীরা। আর তা শুরু হয়েছিল ১৯১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার ভূতত্ত্ববিদ ডগলাস মসানের কুমেরু অভিযানের সময় থেকে। তখন নাকি ওই পেঙ্গুইনদের আওয়াজে কান পাতাই দায় ছিল। এক জায়গায় এমনটাই লিখেছিলেন ডগলাস।

আর এখন?

‘‘এখন ওরা অস্বাভাবিক ভাবেই নিশ্চুপ!’’, মন্তব্য করেছেন নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ক্রিস টার্নি। সাদা-কালো প্রাণীটি এখন আর চনমনে পায়ে ঘুরে বেড়ায় না। ক্রিসের কথায়, কেমন যেন ভদ্র, শান্ত। প্রতিদিনই বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ওরা।

আর কত দিন চালাতে পারবে সেই লড়াই?— এই প্রশ্নের উত্তর নেই ক্রিসের কাছেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন