পর্যটনে বাজি বাজপাখির হাসপাতাল

সপ্তাহের পাঁচ দিন সকাল থেকে দুপুরের নির্দিষ্ট সময়ে দল বেঁধে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৭
Share:

সযত্নে: আবু ধাবির বাজ হাসপাতালে রোগীরা।

পর্যটকদের টানতে হাসপাতাল!

Advertisement

সপ্তাহের পাঁচ দিন সকাল থেকে দুপুরের নির্দিষ্ট সময়ে দল বেঁধে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। তাঁরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন হাসপাতালের সুবিধা। দেখছেন কী করে চিকিৎসা চলছে। রোগীদের সঙ্গে হাসি হাসি মুখে ছবি তুলে বেরিয়ে এসে বলছেন, ‘‘উফ। এমন অভিজ্ঞতা আগে কখনও হয়নি। দারুণ!’’

হাসপাতালে রোগী বলতে রয়েছে রঙবেরঙের বাজ পাখি। আরব মুলুকে আবু ধাবি বিমানবন্দরের কাছেই সেই হাসপাতাল। সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন আবু ধাবি পর্যটন কেন্দ্রের ভারতীয় কান্ট্রি ম্যানেজার বেজান দিনশ। আধ ঘণ্টার মধ্যে ২৫ মিনিটই সময় কাটিয়ে দিলেন সেই বাজ পাখির হাসপাতাল নিয়ে। জানিয়েছেন, যাঁকেই সেই হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, তিনিই সেখান থেকে বেরিয়ে ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁকে।

Advertisement

দিল্লি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদের পরে কলকাতায় বোড-শো করতে এসেছিল আবু ধাবি পর্যটন সংস্থা। সংস্থার দাবি, এমনিতেই এ দেশ থেকে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। তার উপরে বছর চারেক আগে ইতিহাদ বিমানসংস্থা কলকাতা থেকে সরাসরি আবু ধাবির উড়ান চালু করার পরে পূর্ব ভারত থেকেও পর্যটকদের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। আরও পর্যটক যাতে যান, তার জন্যই এই রোড শো-য়ের আয়োজন, জানিয়েছেন বেজান। যাতায়াতের বিমান ভাড়া নিয়ে তিন রাত, চার দিন তিন তারা হোটেলে থাকা খাওয়ার জন্য জন প্রতি গড়ে ৬০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলেও বেজান জানিয়েছেন।

কিন্তু, দুবাই ছেড়ে কেন আবু ধাবি বেড়াতে যাবে পর্যটকেরা?

তখনই এই বাজ হাসপাতাল নিয়ে বলতে শুরু করেন বেজান। জানিয়েছেন, আরব শেখদের শখ-আহ্লাদের শেষ নেই। সেখানে শেখেদের ঘরে ঘরে পোষা বাজ পাখি রয়েছে। রঙচঙে, সুন্দর দেখতে বাজ। বেজান জানিয়েছেন, এমন এক একটি বাজ পাখির দাম প্রায় ৫০ হাজার ডলার। অর্থ্যাৎ প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা।

বেজানের কথায়— সেই বাজ পাখিদের চিকিৎসার জন্য ১৯৯৯ সালে এক জার্মান মহিলা যে ছোট্ট এক ঘরের ক্লিনিক চালু করেছিলেন, সে’টি এখন বিশালাকার হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১১ হাজার বাজ পাখির চিকিৎসা হয় সেখানে। শুধু অসুখ করলেই যে নিয়ে আসা হয় এমনটাও নয়। রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষাও চলে সেখানে। প্রশিক্ষণের জন্যও আনা হয়।

বেজান বলেন, ‘‘হাসপাতালের ভিতরে এমন একটি খোলা জায়গায় বাজ পাখিরা উড়ে বেড়াতে পারে। চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ, পুনর্বাসনের সেই সময়ে পাখির পালক খসে পড়ে। সেই পালক যত্ন করে তুলে রাখা হয়। কোন পালক কোন বাজ পাখির, তাও আলাদা করে লিখে রাখা হয়।’’

পর্যটন কর্তা জানিয়েছেন, শেখরা এই বাজ পাখি ইউরোপ, আমেরিকায় শিকার করাতে নিয়ে যান। সেই সময়ে তাদের পালক খসে পড়ে। হাসপাতালে সযত্নে রেখে দেওয়া সেই পালক কাজে আসে তখন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন