নাইজেরিয়ার গৃহহীনরা ক্ষুব্ধ

বোকো হারামের তাণ্ডবে ঘরছাড়া ২০০৯ থেকে। নিস্তার নেই সব হারিয়েও। তাঁদের ঠাঁই দিতে সরকারের তৈরি আশ্রয় শিবিরগুলিও সাক্ষাৎ নরক। নিয়মিত ত্রাণের অভাবে রোজকার খাবারটুকুও মেলে না সেখানে। নাইজেরিয়ায় সফররত রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিদের সামনে এই রকম হাজারো অভাব-অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন দেশের কয়েক হাজার গৃহহীন মহিলা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মাইদুগুরি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০৪:২১
Share:

ত্রাণের অপেক্ষায়। ছবি: ইন্টারনেট।

বোকো হারামের তাণ্ডবে ঘরছাড়া ২০০৯ থেকে। নিস্তার নেই সব হারিয়েও। তাঁদের ঠাঁই দিতে সরকারের তৈরি আশ্রয় শিবিরগুলিও সাক্ষাৎ নরক। নিয়মিত ত্রাণের অভাবে রোজকার খাবারটুকুও মেলে না সেখানে। নাইজেরিয়ায় সফররত রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিদের সামনে এই রকম হাজারো অভাব-অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন দেশের কয়েক হাজার গৃহহীন মহিলা।

Advertisement

এক সপ্তাহ আগেই রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছিলেন, ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ও অন্নকষ্টে ছাড়খার হয়ে যাবে বোকো হারাম জঙ্গিদের তাণ্ডবের মূল কেন্দ্র উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়া। তাঁর সেই হুঁশিয়ারির পর পরই রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিদের এই সফর।

নাইজেরিয়া, চাদ, ক্যামেরুন ও নাইজার— এই চার দেশ নিয়ে গঠিত আফ্রিকার সমগ্র চাদ হ্রদ অঞ্চল। এখানকার দু’কোটির বেশি নাগরিক বোকো হারাম সন্ত্রাসের শিকার হয়ে যে সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন, সেই দিকে বিশ্বের নজর টানতে সফরে গিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের ১৫ জন দূত। শুক্রবার ক্যামেরুন থেকে শুরু হয়েছে তাঁদের সফর। সোমবার শেষ হয় নাইজেরিয়ায়।

Advertisement

২০০৯ সাল থেকে নাইজেরিয়ায় মাথা চাড়া দিয়েছে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম। গত আট বছরে জঙ্গি সংগঠনটির হাতে খুন হয়েছে কুড়ি হাজারেরও বেশি মানুষ। গৃহহীন কয়েক লাখ। ২০১৪ সালে চিবকের একটি স্কুলে চড়াও হয়ে ২৭৬ জন ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। অভিযোগ, অপহৃতদের অধিকাংশকেই যৌনদাসী বানিয়ে রেখেছে তারা। দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না প্রশাসন। লাগাতার সন্ত্রাস নড়বড়ে করে দিয়েছে তেল সমৃদ্ধ নাইজেরিয়ার অর্থনৈতিক কাঠামোও। পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে দুর্ভিক্ষ। নাইজেরিয়া সরকারকে দুষে ব্রিটেনের প্রতিনিধি ম্যাথু রিক্রফ্ট বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাস হোক বা দুর্ভিক্ষ, কোনওটাই সামলাতে পারছে না পঙ্গু প্রশাসন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের হালও তথৈবচ। বেকারত্বে ডুবে রয়েছে যুবসমাজ। মানবাধিকার বিশেষত নারীসুরক্ষার বালাই নেই।’’

আশ্রয় শিবিরগুলির দুরবস্থার জন্য ত্রাণ সরবরাহকারী সংস্থাগুলির দুর্নীতি ও স্থানীয় প্রশাসনের কারচুপিকেই মূলত দায়ী করেছেন মাইদুগুরির টিচার্স ভিলেজ ক্যাম্পের ১৫ হাজার আবাসিক। ২৮ বছরের এক তরুণী হাজা ফালমাতার কথায়, ‘‘জঙ্গিদের ভয়ে বাড়ি ছেড়েছি। আশ্রয়ের জন্য মাইদুগুরিতে এসেছি। কিন্তু এখানেও আমাদের দুদর্শার অন্ত নেই।’

রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, সমগ্র চাদ হ্রদ অঞ্চলকে সঙ্কট থেকে উদ্ধার করতে অন্তত ১৫০ কোটি ডলার অর্থ প্রয়োজন। যার অর্ধেকের বেশিই প্রয়োজন ধুঁকতে থাকা নাইজেরিয়ার জন্য। নয়তো স্রেফ খাদ্যাভাবে মারা যাবেন কয়েক লক্ষ মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন