বিস্ফোরণের পর আঁটসাঁট নিরাপত্তা পাক আধা সামরিক বাহিনীর সদর দফতরের সামনে। সোমবার পেশোয়ারে। ছবি: রয়টার্স।
পাকিস্তানের পেশোয়ারে আধা সেনার সদর দফতরে হামলার ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে তিন হামলাকারীরও। পাক পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, হামলাকারীদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে। আধা সেনার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বাকি দুই হামলাকারীর।
পাক পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ হামলাকারীদের মধ্যে এক জন পাকিস্তানের আধা সামরিক বাহিনী ‘ফেডেরাল কনস্ট্যাবুলারি’-র সদর দফতরের মূল ফটকে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়। সেই সময়েই আরও দুই হামলাকারী বন্দুক নিয়ে দফতরের ভিতরে ঢোকে। তার পরেই পাক আধা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয় তাদের। মৃত্যু হয় দুই হামলাকারীর।
পাক পুলিশের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, হামলার সময় আধা সেনার সদর দফতরের ভিতরে একটি মাঠে জওয়ানেরা প্যারেডে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানেই হামলা করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে মনে করছেন পাক গোয়েন্দারা। এই প্রসঙ্গে পেশোয়ারের পুলিশ প্রধান সৈয়দ আহমেদ সংবাদ সংস্থা এপি-কে বলেন, “সন্ত্রাসবাদীরা পায়ে হেঁটে এসেছিল। কিন্তু যেখানে জওয়ানেরা প্যারেড করছিল, সেখানে যেতে ব্যর্থ হয় তারা। আমাদের বাহিনী সময়োচিত পদক্ষেপ করে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করেছে।”
বন্দুকবাজদের হামলায় তিন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন পাঁচ জন। আহতদের মধ্যে আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য ছাড়াও কয়েক জন সাধারণ মানুষও রয়েছেন। এই হামলার ঘটনার নিন্দা করে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনীর সঠিক সময়ে পদক্ষেপ করায় আমরা বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়়াতে পেরেছি।” প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জ়ারদারি বলেন, “বাইরের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীরা পাকিস্তানের ঐক্যকে নষ্ট করতে পারবে না।”
এখনও পর্যন্ত কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করেনি। ‘ফেডেরাল কনস্ট্যাবুলারি’ পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সীমান্ত সংঘাতের আবহে তাই এই বাহিনীর সদর দফতরে হামলাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। ইসলামাবাদের অভিযোগ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (যা পাক তালিবান নামেও পরিচিত)-কে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উস্কানি দিচ্ছে আফগানিস্তান। এই হামলার নেপথ্যেও তাদের হাত রয়েছে কি না, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।