চিন-পাকিস্তানকে প্রবল চাপে ফেলে ইরানের ছাবাহারে বন্দর ভারতের

গোয়াদরের পাল্টা ছাবাহার। ভারতকে চাপে ফেলার জন্য চিন-পাকিস্তানের হাত মেলানোর জবাব ইরানকে কাছে টেনে। পাকিস্তানের গোয়াদরে বন্দর বানিয়ে ভারতকে পশ্চিম দিক থেকেও ঘিরতে চাইছে চিন। এই গোয়াদরের মাত্র ৭২ কিলোমিটার পশ্চিমে ইরানের ছাবাহারে ভারত-ইরান যৌথ বন্দর তৈরির সমঝোতা চূড়ান্ত করে ফেললেন সুষমা স্বরাজ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৬ ১৩:৩৬
Share:

পাকিস্তানে চিনা বন্দরের খুব কাছে এই ছাবাহারেই বন্দর তৈরি করছে ভারত।

গোয়াদরের পাল্টা ছাবাহার। ভারতকে চাপে ফেলার জন্য চিন-পাকিস্তানের হাত মেলানোর জবাব ইরানকে কাছে টেনে। পাকিস্তানের গোয়াদরে বন্দর বানিয়ে ভারতকে পশ্চিম দিক থেকেও ঘিরতে চাইছে চিন। এই গোয়াদরের মাত্র ৭২ কিলোমিটার পশ্চিমে ইরানের ছাবাহারে ভারত-ইরান যৌথ বন্দর তৈরির সমঝোতা চূড়ান্ত করে ফেললেন সুষমা স্বরাজ।

Advertisement

ভারত ও ইরানের যৌথ উদ্যোগে আরব সাগরে এই বন্দর তৈরির সমঝোতা রবিবার চূড়ান্ত করেছে বিদেশ মন্ত্রক। চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর গঠন এবং গোয়াদরে চিনা বন্দর তৈরির তোড়জোড় যখন থেকে শুরু হয়েছিল, তার কিছু দিন পর থেকেই ইরানের ছাবাহারে নিজেদের উপস্থিতি সুনিশ্চিত করার বিষয়ে এগোতে শুরু করেছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু খুব ধীরে এগোচ্ছিল সে প্রক্রিয়া। ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি রুখতে আমেরিকা তথা আন্তর্জাতিক মহল সে দেশের উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করায়, ভারত-ইরান যৌথ বন্দর প্রকল্পের অগ্রগতি কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল। কিন্তু ইরানের পাশ থেকে সেই দুর্দিনেও সরে আসেনি ভারত। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ অগ্রাহ্য করে ইরানের কাছ থেকে খনিজ তেল কেনা অব্যহত রাখে ভারত। পরে ইরান পরমাণু কর্মসূচিতে রাশ টেনেছে। তাদের উপর থেকে অনেক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে ইরানের সঙ্গে সমঝোতা বাড়ানো ভারতের পক্ষে এখন অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।

দুর্দিনে যে ভাবে পাশে ছিল ভারত, ইরান এ বার তার প্রতিদান দিতে শুরু করেছে। ইরানের প্রেসেডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠকের পর ভারতের বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সন্তুষ্ট। সুষমাকে রুহানি জানিয়েছেন, ছাবাহার বন্দর নিয়ে ভারত এবং ইরানের যে সমঝোতা, তা একটি দৃষ্টান্তমূলক সমঝোতা হতে চলেছে। গোটা মধ্য এশিয়া ভারত-ইরান যৌথ বন্দরের মাদ্যমে উপকৃত হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

পাক সীমান্তের গায়ে বিরাট বাহিনী নামিয়ে কঠোর বার্তা ভারতের

ভারত আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে বিপুল সাহায্য করছে। কিন্তু আফগানিস্তানে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করার জন্য পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ড বা আকাশসীমা ভারতকে ব্যবহার করতে দেয় না। ইরানের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে পণ্য পাঠাতে হয় ভারতকে। পাকিস্তান সীমান্তের খুব কাছে ওমান উপসাগরের ছাবাহারে ভারত ইরান যৌথ উদ্যোগে বন্দর তৈরি হয়ে গেলে, ভারত-আফগানিস্তান যোগাযোগ আরও মসৃণ হবে। ভারত ইরানে একটি সংস্থা গঠন করেছে ইতিমধ্যেই। সেই সংস্থাই ছাবাহার বন্দর প্রকল্পের দেখভাল করবে। এই বন্দর তৈরির মাধ্যমে ভারতের তিনটি বড় লাভ হচ্ছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। প্রথমত, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা বড় ধাক্কা খাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, চিন-পাকিস্তান জোট ভারতকে চাপে ফেলার যে কৌশল নিয়েছিল, তা ধাক্কা খাচ্ছে। কারণ ইরান এবং আফগানিস্তানকে জোটসঙ্গী বানিয়ে ভারত প্রায় সব দিক থেকে ঘিরে ফেলছে পাকিস্তানকে। তৃতীয়ত, মধ্য এশিয়া এবং পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ব্যবসা বহুগুণ বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়ে যাচ্ছে ভারতের সামনে। আগের চেয়ে খম খরচে খনিজ তেল আমদানির পথ এতে সুগম হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন