বন্ধ এভারেস্ট অভিযান

পুনর্বাসনেও দিল্লিকে পাশে চায় কাঠমান্ডু

উদ্ধার প্রায় শেষ। এ বার কাজ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের। তাই বিদেশি উদ্ধারকারীদের ফিরে যেতে বলল নেপাল। সেই সঙ্গে এই মরসুমে এভারেস্ট অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সরকার। পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের কাজে দিল্লির সাহায্য চেয়েছে কাঠমান্ডু। ভূকম্পের পরে নেপালে গিয়েছিলেন ৩৪টি দেশ‌ের সাড়ে চার হাজার উদ্ধারকর্মী। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কাঠমান্ডু উপত্যকা, সিন্ধুপালচক ও গোর্খা এলাকায় কাজ করছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৫ ০৩:১৬
Share:

উদ্ধার প্রায় শেষ। এ বার কাজ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের। তাই বিদেশি উদ্ধারকারীদের ফিরে যেতে বলল নেপাল। সেই সঙ্গে এই মরসুমে এভারেস্ট অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সরকার। পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের কাজে দিল্লির সাহায্য চেয়েছে কাঠমান্ডু।

Advertisement

ভূকম্পের পরে নেপালে গিয়েছিলেন ৩৪টি দেশ‌ের সাড়ে চার হাজার উদ্ধারকর্মী। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কাঠমান্ডু উপত্যকা, সিন্ধুপালচক ও গোর্খা এলাকায় কাজ করছিলেন। গত কাল নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বামদেব গৌতমের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় প্রাকৃতিক বিপর্যয় ত্রাণকমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, উদ্ধারকারীদের আর নেপালে থাকার প্রয়োজন নেই। সে কথা তাঁদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ডিজি ও পি সিংহ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বাহিনী ফেরানোর কাজ শুরু করেছেন তাঁরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র লক্ষ্মীপ্রসাদ ধকলের কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ীই ৭ দিন উদ্ধারকার্য চালাতে হবে। তখনই ধ্বংসস্তূপে জীবিতদের খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এখন উদ্ধারের যেটুকু কাজ বাকি রয়েছে তা নেপালি সেনা ও পুলিশই করতে পারবে।’’ তবে প্রত্যন্ত এলাকায় বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে কিছু কাজ করা চলবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী মিনেন্দ্র রিজাল।

Advertisement

বিপর্যয়ের জেরে এই মরসুমের মতো এভারেস্ট অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুশীল কৈরালা সরকার। এভারেস্টে ওঠার পথ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে শেরপাদের বিশেষ দল ‘‘আইসফল ডক্টরস’’। তারা জানিয়েছে, ভূকম্পের ফলে প্রচুর তুষারধস নেমেছে। তাতে এভারেস্টের পথ এমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে তা এই মরসুমে আর সারানো সম্ভব নয়। এই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই এভারেস্ট অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বেস ক্যাম্প থেকে অভিযাত্রীরা সকলেই ফিরে এসেছেন। বাঙালি অভিযাত্রীদের আগামিকাল কাঠমান্ডু থেকে কলকাতার উড়ান ধরার কথা।

ত্রাণের ক্ষেত্রে গোড়া থেকেই নেপালের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। এ বার পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনেও দিল্লির সাহায্য চেয়েছে কাঠমান্ডু। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ জানিয়েছেন, এই বিষয়েও নেপালের পাশে আছে ভারত। ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতি দ্রুত সে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে দিল্লি।

ভূকম্পে প্রবল ক্ষতির ফলে কার্যত বিধ্বস্ত নেপালের পর্যটন শিল্প। সেই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে সে দেশের বিমা সংস্থাগুলি। এই ধরনের বিপর্যয়ের জন্য কিছুটা প্রস্তুতি সব সময়েই নেওয়া থাকে বলে জানান বিভিন্ন নেপালি বিমা সংস্থার কর্তারা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ভারতীয় বিমা সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা রয়েছে তাদের।

ভারত তার ‘‘ভাইয়ের’’ পাশেই আছে বলে আজ মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে আজ হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুদ্ধের জন্মস্থান নেপাল এবং ভারতে ভূকম্পে হতাহতদের স্মরণে সেখানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মোদী বলেন, ‘‘শুধু বুদ্ধের বাণীই আমাদের সঠিক পথ দেখাতে পারে। গুজরাতে সচিবালয়ের বাইরে বুদ্ধের মূর্তি বসিয়েছিলাম। আমার সমালোচকদের বোধহয় তা চোখে পড়েনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন