চিন-বিরোধী অক্ষ নিয়ে তৎপরতা

ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত পরিধি বাড়ানোর জন্য সক্রিয় হচ্ছে সাউথ ব্লক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৪
Share:

নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র

ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত পরিধি বাড়ানোর জন্য সক্রিয় হচ্ছে সাউথ ব্লক। সম্প্রতি পূর্ব ও পশ্চিম এশিয়া, ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে নিয়ে ভারত মহাসাগর বিষয়ক বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিষয়টি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আসিয়ান রাষ্ট্রগোষ্ঠীই শুধু ভারতের প্রশান্ত মহাসাগরীয় নীতির কেন্দ্রে রয়েছে এমনটা ভাবা আর ঠিক নয়। পশ্চিম এশিয়ার উপকূলবর্তী রাষ্ট্রগুলি এবং আফ্রিকাকেও এর মধ্যে সামিল করতে হবে।’’ এ ভাবেই এশিয়ায় শক্তিশালী চিন-বিরোধী অক্ষ তৈরি করতে চাইছে দিল্লি।

Advertisement

সাবেকি রেওয়াজ ভেঙে আসিয়ানকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় নীতিকে আরও বিস্তৃত করে দেখার সক্রিয়তা বেশ কিছুদিন আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে। গত বছর নয়াদিল্লির প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আসিয়ানভুক্ত ১০টি রাষ্ট্রের নেতাকেই বিশেষ অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের ব্যাখ্যা, গত কয়েক বছরে দক্ষিণ চিন সাগরের আধিপত্য নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া আসিয়ানের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে, নতুন শক্তিশালী সমীকরণ তৈরিতে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী। ‘অ্যাক্ট-ইস্ট’ নীতি নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে পথ চলছিল মোদী সরকার। কিন্তু এবার কৌশলগত ক্ষেত্রেও সেই ‘পূর্ব’-কে আরও বড় ভাবে পাশে চাওয়া হচ্ছে। ডোকলাম পরবর্তী অধ্যায়ের মূল্যায়নে এ কথাই উঠে এসেছে যে সীমান্তে মুখোমুখি সংঘর্ষের রাস্তায় যাওয়াটা শেষপর্যন্ত অর্থহীন। তাতে এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বড় বিপদ তৈরি হতে পারে। যা ভারতের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে ক্ষতিকরও। তাই বাণিজ্য-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক মধুর রাখার পাশাপাশি স্থির করা হয়েছে,

এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে একটি চিন-বিরোধী আঞ্চলিক অক্ষ জোরদার করতে হবে। কৌশলগত ভাবে চিনকে চাপে রাখতে পারলে অন্য ক্ষেত্রে দরকষাকষির ক্ষেত্রে সুবিধে হবে, এমনটাই মনে করছে সাউথ ব্লক। উল্টো দিক থেকে এটা এতদিন চিন-ই করে এসেছে, এমনটাই দাবি বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, ‘ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়ান ওশান’ অঞ্চল (মরিশাস, সেশেলস, মাদাগাস্কারের মত দ্বীপরাষ্ট্রগুলি) এবং‌ আফ্রিকার সঙ্গে ভারতের এই সাগর নীতিকে সংযুক্ত করা হবে। জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘আমাদের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় নীতির সঙ্গে যুক্ত করা হবে আফ্রিকায় আমাদের অংশীদার রাষ্ট্রসমূহ, আরব সাগর ও উপসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্রগুলিকে। সবচেয়ে বড় কথা হল এই জলপথকে মুক্ত করা এবং সবাই যাতে এটি ব্যবহার করতে পারে তা নিশ্চিত করা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন