মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর তাঁর প্রথম বিদেশ সফরের জন্য ইব্রাহিম সোলি বেছে নিয়েছেন ভারতকেই। ছবি: পিটিআই।
ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপে চিনের অনর্গল নজরদারি আপাতত বন্ধ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের শেষ পর্বের এই কূটনৈতিক স্বস্তিকে স্বাগত জানাতে গিয়ে আজ রীতিমতো উচ্ছ্বসিত সাউথ ব্লক।
মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর তাঁর প্রথম বিদেশ সফরের জন্য ইব্রাহিম সোলি বেছে নিয়েছেন ভারতকেই। আজ তাঁর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর মলদ্বীপকে ১৪০ কোটি ডলার অর্থ সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মোদী। এ ছাড়াও সে দেশকে নানা ভাবে ঢালাও সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে ভারত। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে চিনের নাম না করে মোদী বলেন, ‘‘আমরা আমাদের দেশে এমন কোনও কার্যকলাপ হতে দেব না, যা পরস্পরের জন্য ক্ষতিকর।’’ মোদীর বক্তব্য, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সহযোগিতা বাড়ানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে দু’পক্ষের।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অথবা ভুটানের রাজার মতোই উষ্ণতা এবং সম্মান জানাতে সোলিকে রাখা হয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনে। তিনি আজ বলেন, ‘‘ভারত শুধু আমাদের ঘনিষ্ঠতম বন্ধু নয়, সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদারও।’’ কূটনৈতিক সূত্রের মতে, মলদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে এই মন্তব্য সাউথ ব্লকের কাছে মধুর সঙ্গীত শোনার সামিল! কেন না, দ্বিপাক্ষিক অস্বস্তি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল যে, সামলানো দায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল নয়াদিল্লির পক্ষে।
স্বাগত: মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
ভারত মহাসাগরের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার প্রশ্নে মলদ্বীপের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভারতের জন্য। কিন্তু দ্বীপরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট যে ভাবে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর জন্য এবং ভারতীয় সংস্থা ও ভারতীয় পেশাদারদের জন্য সে দেশের দরজা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে শুরু করেছিলেন, তাতে ভারতীয় জলসীমার নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়ে যাচ্ছিল। ভারতের সঙ্গে
যাবতীয় সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করে মলদ্বীপ যদি চিনকে সামরিক ঘাঁটি বানানোর জন্য জমি দেয়, তা হলে তা নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট। মলদ্বীপ নিয়ে এই পরিস্থিতির জন্য মোদী সরকারের বিদেশনীতির ব্যর্থতার দিকেই আঙুল তুলতে শুরু করেছিল বিভিন্ন শিবির।
সেই অস্বস্তিও আপাতত কাটল মোদী সরকারের।