আর্থিক অন্যায় রোখার বার্তা দিলেন মোদী

 জাপান ও আমেরিকার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ‘জয়-ধ্বনির’ তোলার পরেই পলাতক আর্থিক অপরাধীদের বাগে আনতে জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে ৯ দফা কর্মসূচি পেশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বুয়েনস আইরেস শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩০
Share:

জাপান ও আমেরিকার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ‘জয়-ধ্বনির’ তোলার পরেই পলাতক আর্থিক অপরাধীদের বাগে আনতে জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে ৯ দফা কর্মসূচি পেশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর আমলের ভারতকে ‘সর্বকালের সব চেয়ে শক্তিশালী’ বলে শংসাপত্র দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবং জানা গেল, ২০২২ সালে জি-২০ বৈঠক হবে ভারতেই। সব মিলিয়ে স্বস্তি মোদীর!

Advertisement

বিজয় মাল্য, নীরব মোদী, মেহুল চোক্সীদের মতো ঋণখেলাপি ব্যবসায়ীদের মোদী সরকারই পালাতে সাহায্য করেছে বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। আর্জেন্টিনায় শীর্ষ বৈঠকে কার্যত সেই দুর্নাম ঘোচাতেই সক্রিয় মোদী। আর্থিক, বাণিজ্যিক ও কর বিষয়ক অধিবেশনে ‘আর্থিক অপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, তাঁদের দ্রুত প্রত্যর্পণ ও দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের মধ্যে জোরালো ও সক্রিয় সহযোগিতা’ চেয়ে সওয়াল করেছেন তিনি। এই অপরাধীরা যাতে কোনও দেশে নিশ্চিন্ত আশ্রয় না-পান সে জন্য জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিকে একটি মেকানিজম তৈরির ডাক দেওয়ার পাশাপাশি ভারতের আর্জি, ফিনানশিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) এ বিষয়ে সক্রিয় হোক। ফেরার আর্থিক অপরাধীর সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং তাঁদের চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে আগাগোড়া আইনি পদক্ষেপের একটি কাঠামো তৈরি করুক তারা। প্রয়োগ করা হোক রাষ্ট্রপুঞ্জের দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত সনদও।

গত কাল জি-২০-র ফাঁকে ত্রিপাক্ষিক পার্শ্ববৈঠকে ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে যোগাযোগ, উন্নয়ন, বিপর্যয় মোকাবিলা, সমুদ্র-নিরাপত্তা এবং উদ্দেশ্যহীন যাত্রা নিয়ন্ত্রণ-সহ পাঁচটি ‘অ্যাকশন পয়েন্ট’ পেশ করেছেন মোদী। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘জয় (জাপান, আমেরিকা, ভারত) মানে সাফল্য! বৈঠকের শুরুটা দারুণ হল। ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারসাম্য বজায় রাখতে কাছাকাছি এল তিন বন্ধুভাবাপন্ন দেশ, যারা একই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী।’’

Advertisement

পূর্ব ও দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের আধিপত্য মাথাব্যথা তিন দেশেরই। বৈঠকে তাই গোটা এলাকার শান্তি-উন্নয়নের লক্ষ্যে মুক্ত, ও সর্বাত্মক ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন তিন রাষ্ট্রনেতা। ঐক্যের কথা বলেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রীও। আর ত্রিপাক্ষিক সমঝোতার গুরুত্ব বোঝানোর ফাঁকে ভারত সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘ভারত এখন সম্ভবত সর্বকালের সব চেয়ে শক্তিশালী। আমরা একসঙ্গে প্রচুর ব্যবসা, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কেনাকাটা করছি।’’

আজই আবার নৈশভোজ বৈঠকে বসেন ট্রাম্প এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। সম্মেলনে দু’দেশের বাণিজ্য-যুদ্ধ প্রশমনের ইঙ্গিত মিলেছে বলে খবর। তবে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ছায়ায় দৃশ্যতই বিতর্কিত হয়ে রইল সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের উপস্থিতি। সেই অর্থে এ বারের ঘোষিত ‘ঐকমত্য’ একটিই বিষয়ে। তা হল, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়রের প্রয়াণে শোকবার্তা। ইমানুয়েল মাকরঁ তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘এমন এক জন, যিনি ইউরোপের সঙ্গে মৈত্রীর জোরদার সমর্থক ছিলেন।’’ প্রচ্ছন্ন খোঁচা এখানেও। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও ট্রাম্পের বিরুদ্ধেই বাকি রাষ্ট্রনেতাদের জোট তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন