উরি হামলার পরে থমকে গিয়েছিল আলোচনা। তার পরে সিন্ধু জলচুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে পাকিস্তানকে জল নিয়ে বিপাকে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল ভারত। আজ সেই জলচুক্তি নিয়েই ফের আলোচনার টেবিলে বসল ভারত ও পাকিস্তান।
ভারত থেকে পাকিস্তানে প্রবাহিত ছ’টি নদীর জলের উপরে দু’দেশের অধিকার নিয়ন্ত্রণ করে সিন্ধু জলচুক্তি। ওই নদীগুলির উপরে কৃষ্ণগঙ্গা, রাতলে, পাখতুল, মিয়ার, নিম্ন কালনাইয়ের মতো ভারতের বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে আপত্তি আছে পাকিস্তানের। কৃষ্ণগঙ্গা নিয়ে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল ইসলামাবাদ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই প্রকল্পকে ছাড়পত্র দিয়েছে আদালত। তবে দিল্লিকে তার বিনিময়ে পাকিস্তানকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল দিতে হবে।
উরি হামলা ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ঠাণ্ডা ঘরে চলে যায়। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার পথ যে পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না তা বিলক্ষণ জানে নরেন্দ্র মোদী সরকার। লস্কর নেতা হাফিজ সইদকে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে গৃহবন্দি করে কিছুটা ওয়াশিংটন ও দিল্লিকে কিছুটা সদর্থক বার্তা দিতে পেরেছে নওয়াজ শরিফ সরকার। রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই মস্কো সফরে যাবেন নরেন্দ্র মোদী। তার আগে ভারত-পাক আলোচনা শুরুর জন্য আমেরিকার পাশাপাশি চাপ দিয়েছে রাশিয়াও। ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে ট্র্যাক-টু আলোচনায় স্থির হয়, উত্তরপ্রদেশে ভোটের পরে জলচুক্তি নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমেই আলোচনা ফের শুরু করা হবে। তার পরে ধীরে ধীরে বিদেশসচিব পর্যায়ের আলোচনার জমি তৈরি করবে দু’দেশ।
ইসলামাবাদে আজ পাক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ভারতের সিন্ধু জল কমিশনার পি কে সাক্সেনার নেতৃত্বাধীন ১০ সদস্যের দল। মোদী সরকার সূত্রে খবর, পাখরুল, মিয়ার ও নিম্ন কালনাই প্রকল্পের নকশা চেয়েছে পাকিস্তান। ওই প্রকল্পগুলি যে জলচুক্তির শর্ত মেনেই তৈরি হচ্ছে তা নিয়ে নিশ্চিত হতে কাশ্মীরে বিশেষজ্ঞ দলও পাঠাতে চায় ইসলামাবাদ।