কানাডায় জাতিবিদ্বেষ নিয়ে তরজা, নিশানায় ভারতীয়ও

কর্মসূত্রে সাত বছর কানাডায় রয়েছেন রাহুল কুমার। গত সপ্তাহে গাড়ি রাখা নিয়ে এক শ্বেতাঙ্গ মহিলার সঙ্গে ঝামেলা বাধে। মহিলা বলতে থাকেন, ‘‘পাকি, নিজের দেশে চলে যাও।’’ শুধু তা-ই নয়, ‘মলের রঙের চামড়া তোমার’ বলেও আক্রমণ করেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

টরন্টো শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৮ ০৩:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফের কানাডায় জাতিবিদ্বেষের শিকার এক ভারতীয়।

Advertisement

কর্মসূত্রে সাত বছর কানাডায় রয়েছেন রাহুল কুমার। গত সপ্তাহে গাড়ি রাখা নিয়ে এক শ্বেতাঙ্গ মহিলার সঙ্গে ঝামেলা বাধে। মহিলা বলতে থাকেন, ‘‘পাকি, নিজের দেশে চলে যাও।’’ শুধু তা-ই নয়, ‘মলের রঙের চামড়া তোমার’ বলেও আক্রমণ করেন তিনি। রাহুল মোবাইল ফোনে গোটা ঘটনা ভিডিয়ো করতে থাকলে, তিনি জানিয়ে দেন কাউকে ডরান না। যাওয়ার আগে রাহুলের গাড়িতে থুতু ছিটিয়ে দিয়ে যান। এমনকি পরে সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়লে সংবাদমাধ্যমের কাছে মহিলা জানান, ক্ষমা তিনি চাইবেন না। যা করেছেন, বেশ করেছেন।

গত মাসেও এক ভারতীয় দম্পতি হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন। একের পর এক এ ধরনের ঘটনায় স্পষ্ট জাতিবিদ্বেষ বাড়ছে কানাডায়। নিশানায় ভারতীয়েরাও। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে অস্বস্তিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও। এ বছরের গোড়াতেই যেমন এক কিশোরের সামনে অপ্রস্তুত দেখায় তাঁকে। সে জানতে চেয়েছিল, ‘বিদ্বেষী’দের বিরুদ্ধে তিনি কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন। কিন্তু এ বারে ‘বিদ্বেষ’ প্রসঙ্গে কড়া মন্তব্য করায় উল্টে সমালোচনার মুখে ট্রুডো।

Advertisement

সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা যায়, মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছেন ট্রুডো। সামনে ছোটখাটো ভিড়। ট্রুডোকে লক্ষ্য করে এক মহিলা ক্রমাগত ফরাসিতে চেঁচিয়ে যাচ্ছেন— ‘‘বেআইনি অনুপ্রবেশ আটকাতে আমরা যে ১৪ কোটি ৬০ লক্ষ ডলার দিয়েছিলাম, ফেডারেল সরকার কী সেটা আমাদের ফেরত দেবে?’’ মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন একটি লোক। তিনিও সঙ্গ দিলেন। চেঁচালেন— ‘‘আমরা মোহক টেরিটরি (কানাডার মোহক নামের আদি জনগোষ্ঠীর জন্য নির্ধারিত অঞ্চল)-তে থাকি না।’’ এর পর মঞ্চ থেকেই মহিলার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনার অসহিষ্ণুতাকে সাধুবাদ জানাতে পারছি না।’’ দেশের আদি জনগোষ্ঠীর উদ্দেশে অসম্মানজনক মন্তব্যের জন্য লোকটিকেও তিরস্কার করেন। ট্রুডোর কথায় হাততালিতে ফেটে পড়েছিল ভিড়। কিন্তু মহিলাকে থামানো যায়নি। ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে, মঞ্চ ছেড়ে নেমে যাওয়ার সময়ে ট্রুডোর পিছু ধাওয়া করেন ওই মহিলা। বলতে থাকেন, ‘‘কিউবেকদের প্রতি অসহিষ্ণু আপনি?’’ জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনার জাতিবিদ্বেষের কোনও স্থান নেই এখানে।’’

পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় খোঁজ মেলে মহিলার। তিনি ‘স্টর্ম অ্যালায়েন্স’ নামে কট্টরপন্থী অভিবাসী-বিরোধী সংগঠনের সদস্যা। জানান, ট্রুডোর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পেরে তিনি খুশি। উল্টো দিকে, মহিলাকে ‘জাতিবিদ্বেষী’ বলায় দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রুডো। নিন্দুকদের বক্তব্য, অনুপ্রবেশ আটকানো সংক্রান্ত একটা ‘সামান্য’ প্রশ্নের জবাবে এক মহিলাকে কী ভাবে ‘জাতিবিদ্বেষী’ বলে আক্রমণ করতে পারেন তিনি? বিরোধী দলগুলোও এক হাত নিয়ে বলছে, ট্রুডো দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কাজ করছেন। আমেরিকা থেকে হুড়মুড় করে শরণার্থীরা ঢুকে পড়ছেন কানাডায়। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘অর্ধ-সত্যের পিছনে মুখ লুকোতে জানে না আমাদের সরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন