Russia

Russia-Ukraine War: খারকিভের কোথাও ওর দেহটা আছে, হাতে পাব কবে? প্রশ্ন ইউক্রেনে নিহত নবীনের বাবার

মৃত্যুর ১১ এবং ৩০ দিনে পুজো করার নিয়ম জ্ঞানগউধর পরিবারে। সে সব এখনও কিছুই করা হচ্ছে না বলে জানালেন শেখরাপ্পা। তিনি জানান, প্রথা অনুযায়ী মৃতুর পর দেহ ছাড়া সেই পুজোও সম্পূর্ণ করা যাবে না। তাঁর কথায়, ‘‘এ জন্য আমি এখনও কিছু করিনি। শুধু অপেক্ষা করছি দেহ ফেরার। প্রার্থনা করছি যাতে দেহটা যেন ফিরে আসে, ওর আত্নার শান্তির জন্য অন্তত পুজোটা যাতে করতে পারি।’’

Advertisement

সারমিন বেগম

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২২ ১৯:১৬
Share:

নিহত ভারতীয় ছাত্র নবীন জ্ঞানগউধর। ফাইল চিত্র।

১৪ দিন অতিক্রান্ত। রুশ হামলায় নিহত ভারতীয় ছাত্র নবীন জ্ঞানগউধরের দেহ এখনও হাতে পেল না তাঁর পরিবার। সোমবার ভারতীয় দূতাবাসের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক আধিকারিকও যোগাযোগ করেছেন জ্ঞানগউধর পরিবারের সঙ্গে। শেখরাপ্পা জ্ঞানগউধরের আশা, ছেলে নবীনের দেহ হয়তো তাঁরা ফেরত পাবেন। তবে কবে, তা নিয়ে এখনও সন্দিহান তাঁরা।

Advertisement

গত ১ মার্চ খারকিভে রুশ হামলায় নিহত হন নবীন। কর্নাটকের ওই বাসিন্দা ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে আটকে পড়া পড়ুয়াদের অনেকেই দেশে ফিরে এসেছেন। কিন্তু কর্নাটকের হাভেরি গ্রামের জ্ঞানগউধর পরিবারের ছোট ছেলে নবীন বাড়ির উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগেই খারকিভে ক্ষেপাণস্ত্রের আঘাতে প্রাণ হারান। ডাক্তারির চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া নবীনের পরিবার এখনও তাঁর দেহ পায়নি। রবিবার সরকারের তরফে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় বলে জানিয়েছেন শেখরাপ্পা। তাঁকে বলা হয়, ইউক্রেনে আটকে থাকাদের বার করা হয়েছে। এ বার নবীনের দেহ ফেরানো হবে। সোমবার ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাসের তরফ থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। শেখরাপ্পা বলেন, ‘‘আজ সকাল থেকে কিছু প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগ থেকেও বেশ কয়েক বার ফোন এসেছে আমাদের কাছে। ইউক্রেনের দূতাবাস থেকেও ফোন করে জানানো হয়, নবীনের দেহ ফেরানোর জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে কথাবার্তা চলছে।’’ ফলে আশার আলো দেখছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার প্রতিটা দিন দুঃখকষ্টে কাটছে। কিন্তু আজকের কথাবার্তার পর কিছুটা আশার আলো দেখছি।’’

ফোন করে নবীনের বাবা ও দাদার নাম, বাড়ির ঠিকানা-সহ বেশ কিছু তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান শেখরাপ্পা। তিনি বলেন, ‘‘হর্ষ (নবীনের দাদা) এবং আমার আধার কার্ডের নম্বর চাওয়া হয়েছিল। সে সবও পাঠিয়ে দিয়েছি। নবীনের দেহ ফেরানো নিয়ে দূতাবাসের তরফে ইউক্রেনের আধিকারিকদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। দেহ ফিরতে কত সময় লাগতে পারে, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য জানানো হয়নি।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সকলেই শেখরাপ্পাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, তাঁরা নবীনের দেহ ফেরানোর জন্য সব রকমের চেষ্টা করছেন। কর্নাটক বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান বাসবরাজ হোরাট্টি দিনদুয়েক আগে তাঁদের বাড়ি আসেন বলে জানান শেখরাপ্পা। তাঁর কথায়, ‘‘বাসবরাজ আমাদের বাড়িতে এসে নবীনের দেহ ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের বাড়িতে বসেই উনি সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তাতে কিছু কাজ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সোমবার বিধানসভায় আমার ছেলের দেহ ফেরানোর বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানিয়ে গিয়েছিলেন। নবীনের দেহ ফেরানোর বিষয়টি আজ রাজ্য বিধানসভাতেও আলোচনা হয়েছে।’’

Advertisement

মৃত্যুর ১১ এবং ৩০ দিনে পুজো করার নিয়ম জ্ঞানগউধর পরিবারে। সে সব এখনও কিছুই করা হচ্ছে না বলে জানালেন শেখরাপ্পা। তিনি জানান, প্রথা অনুযায়ী মৃতুর পর দেহ ছাড়া সেই পুজোও সম্পূর্ণ করা যাবে না। তাঁর কথায়, ‘‘এ জন্য আমি এখনও কিছু করিনি। শুধু অপেক্ষা করছি দেহ ফেরার। প্রার্থনা করছি যাতে দেহটা যেন ফিরে আসে, ওর আত্নার শান্তির জন্য অন্তত পুজোটা যাতে করতে পারি।’’

প্রসঙ্গত, ১ মার্চ ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের দিকে রওনা হওয়ার পরিকল্পনা ছিল নবীনের। তার আগে স্থানীয় শপিং মলে গিয়েছিলেন খাবার এবং টাকা বদলের জন্য। রাস্তায় হামলার শিকার হন। ইউক্রেনে রুশ হামলায় মৃত্যু হয় প্রথম ভারতীয় পড়ুয়ার। ইউক্রেনে থাকাকালীন রোজ পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা হত ছেলের সঙ্গে। এখন ছোটছেলের দেহ ঠিক কোখায় রাখা আছে জানেন না বাবা। বললেন, ‘‘খারকিভ সিটির কোথাও রাখা আছে বলে জানতে পেরেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন