দীপাবলির ছুটিতে আর ফেরা হল না ভব্যের

কাজের সূত্রে গত সাত বছর ধরেই জাকার্তার বাসিন্দা পাইলট ভব্য। কিন্তু তাতে কী! ফি বছর দীপাবলিতে ঘরে ফেরা চাই তাঁর। আর দিল্লি ফিরে বাইরে ঘুরতে যাওয়া অভ্যাস করে ফেলেছিলেন ভব্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাদা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৮
Share:

অতলে: দুর্ঘটনায় মৃত ভারতীয় পাইলট ভব্য সুনেজা-ও। ছবি: ফেসবুক।

এ বার দিল্লি ছুঁয়েই বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল উত্তরাখণ্ডের মানেশ্বরে। প্রতিবারের মতো এ বার দীপাবলিতে বাড়ি ফিরে তার পরে কোথায় ঘুরতে যাবেন, সেই পরিকল্পনা আগে থেকেই নিখঁুত ভাবে সেরে রেখেছিলেন পাইলট ভব্য সুনেজা। ঘুরতে যাওয়ার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু ও আত্মীয়রা।

Advertisement

কিন্তু আজ সকালে ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ার-এর বিমান দুর্ঘটনা তছনছ করে দিল্লির ময়ূর বিহারের সুনেজা পরিবারকে। জাভা সাগরে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া বিমানে কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই জানিয়ে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বেড়ানোর জন্য তাই ব্যাগ গোছানো হল না সুনেজা পরিবারের। এই অবস্থায় দীপাবলিতে ছেলের জন্য দিন গোনার বদলে রাতের বিমানে জার্কাতা ছুটেছেন ভব্যের বাবা-মা।

কাজের সূত্রে গত সাত বছর ধরেই জাকার্তার বাসিন্দা পাইলট ভব্য। কিন্তু তাতে কী! ফি বছর দীপাবলিতে ঘরে ফেরা চাই তাঁর। আর দিল্লি ফিরে বাইরে ঘুরতে যাওয়া অভ্যাস করে ফেলেছিলেন ভব্য। গত বছর গিয়েছিলেন রাজস্থানে। এ বার পরিকল্পনা ছিল উত্তরাখণ্ডে যাওয়ার। বিয়ে হয়েছিল বছর দুয়েক। দু’দিন আগেই জাকার্তায় ‘করবা চৌথ’ পালন করেছিলেন তাঁর স্ত্রী গরিমা। ভব্য ফেসবুকে বন্ধুদের জানিয়েছিলেন, ফি বছরের মতো এ বারও দীপাবলিতে দেশে ফেরার কথা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হল না। ইন্দোনেশিয়ার জাভার কাছে সমুদ্রেই হারিয়ে গেলেন দিল্লির ৩১ বছরের ভব্য।

Advertisement

ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ার-এর বিমান দুর্ঘটনা তছনছ করে দিল দিল্লির ময়ূর বিহারের সুনেজা পরিবারকে। ছবি: রয়টার্স।

ময়ূর বিহারের অ্যালকন স্কুল থেকে ২০০৫ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। এর পর ২০০৯ সালে বিইএল এয়ার ইন্টারন্যাশনাল সংস্থা থেকে বিমান চালানোর লাইসেন্স পান তিনি। প্রথমে দু’বছর শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করেন এমিরেটস বিমান সংস্থায়। তার পর ২০১১ সালে যোগ দেন ইন্দোনেশিয়ার সস্তার বিমান সংস্থা লায়ন এয়ার-এ। সেই শুরু। তার পর টানা সাত বছর ধরে ওই সংস্থাতেই কর্মরত ছিলেন ভব্য। প্রায় ছয় হাজার ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ভাঁড়ারে জমেছিল তাঁর।

আরও পড়ুন: ভাগ্যিস যানজট! বিমান না পেয়ে প্রাণে বাঁচলেন ইন্দোনেশিয়ার যাত্রী

তার ভিত্তিতে ভারতের একটি সংস্থায় চাকরির জন্য আবেদনও করেছিলেন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় ওই সংস্থায় যোগ দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত কথাবার্তাও হয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত নতুন বছরের শুরুতে সেখানে যোগ দিতেন ভব্য। দেশে ফেরাই আর হল না অভিজ্ঞ এই পাইলটের।

আরও পড়ুন: জাভা সাগরে ভেঙে পড়ল লায়ন এয়ারের বিমান, মৃত ১৮৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন