International News

ইরানের তেল: দিল্লি কোপে পড়তে পারে নিষেধাজ্ঞার, ইঙ্গিত ওয়াশিংটনের

ফলে মাসখানেক আগে অস্ত্রশস্ত্র, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি বেচার জন্য চুক্তি (‘ক্যাটসা’) করে ভারতকে সবচেয়ে কাছের দেশগুলির তালিকায় আনলেও ইরানের তেল ও রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার দায়ে দিল্লির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারির ভাবনাচিন্তাটা যে ওয়াশিংটনের মাথায় রয়েছে, তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:০২
Share:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত।

ইরানের তেল আর রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা ‘এস-৪০০’ কেনার জন্য কি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়তেই হচ্ছে ভারতকে? বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পে দেওয়া ইঙ্গিত আর শুক্রবার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র হিদার ন্যুয়ার্টের মন্তব্য সেই আশঙ্কাকে জোরালো করল। গত কাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ব্যাপারে বলেছিলেন, ‘‘সিদ্ধান্তটা ভারতকেই নিতে হবে।’’ এ দিন মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ন্যুয়ার্ট বলেন, ‘‘ভারত তো সহযোগিতা করছে না।’’

Advertisement

ফলে মাসখানেক আগে অস্ত্রশস্ত্র, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি বেচার জন্য চুক্তি (‘ক্যাটসা’) করে ভারতকে সবচেয়ে কাছের দেশগুলির তালিকায় আনলেও ইরানের তেল ও রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার দায়ে দিল্লির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারির ভাবনাচিন্তাটা যে ওয়াশিংটনের মাথায় রয়েছে, তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। ক্যাটসার অন্যতম শর্ত ছিল, রুশ ‘এস-৪০০’ কিনলে এবং নভেম্বরের ৪ তারিখের পর ইরানের তেল কিনলে জারি হবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। রুশ ‘এস-৪০০’ কেনার দায়ে ইতিমধ্যেই ভারতের প্রতিবেশী চিনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ওয়াশিংটন। তার প্রেক্ষিতে আলোচনা শুরু হয়, এ বার ভারতের বিরুদ্ধেও এমন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি হবে কি না।

এ দিন ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ন্যুয়ার্ট বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান আমরা খুব স্পষ্ট ভাবেই সব দেশকে জানিয়ে দিয়েছি। কোনও দেশ রুশ ‘এস-৪০০’ কিনুক আর ইরান থেকে কেউ তেল কিনুক ৪ নভেম্বরের পর, এটা আমরা চাইছি না। গত মাসে (সেপ্টেম্বর) দিল্লিতে গিয়ে ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের সময় ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে তার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পায়ো। আমরা শুনেছি, ভারত নভেম্বরেও ইরানের তেল কিনবে। এর প্রেক্ষিতে বলতে পারি, ভারত সহযোগিতা করছে না। আমরা খুব কড়া নজর রাখছি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন- বিশ্ব জুড়ে আগামী ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকতে পারে ইন্টারনেট পরিষেবা!​

আরও পড়ুন- ইরান-নিষেধ নিয়ে তোপে আমেরিকা​

গত সোমবার কেন্দ্রীয় তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল শোধনাগার নভেম্বরেও তেল পাওয়ার জন্য অর্ডার পাঠিয়েছে ইরানে।

ন্যুয়ার্ট জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে সব দেশের সঙ্গেই আমেরিকা আলোচনা করেছে। এখনও কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ, যে ভাবেই হোক ইরানের কাছ থেকে তেল কেনাটা বন্ধ করতে হবে।

ন্যুয়ার্টের কথায়, ‘‘তেল বেচে যে অর্থ রোজগার করে ইরান তা শুধুই তারা দেশের মানুষের হিতার্থে খরচ করছে, খরচ করছে হাসপাতাল বানাতে, তা নয়। ওই অর্থে তারা বহু নিন্দনীয় কাজ করছে। সেই কাজগুলিকে অন্যত্র ছড়ানোর চেষ্টা করে চলেছে। এটা রুখতেই ইরানের তেল কেনা বন্ধ করা উচিত অন্য দেশগুলির।’’

হোয়াইট হাউস সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল, সেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ অবশ্য বলছেন, ভারতের বিরুদ্ধে এখনই এই নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনেই। ভারতকে ‘নরম চোখে’ দেখতে চাইছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জেমস ম্যাটিস। আর আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন হাঁটতে চাইছেন অন্য পথে। কেউ চাইছেন, নিষেধাজ্ঞা জারি হোক। আর সেটা এখনই হোক। আবার কেউ বলছেন, নিষেধাজ্ঞা জারির প্রয়োজন নেই। বরং নিষেধাজ্ঞা জারির চাপ দিয়ে মার্কিন পণ্যে শুল্ক হ্রাস করিয়ে নিক ওয়াশিংটন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন