রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েকশিয়ান। ছবি রয়টার্স।
রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) নতুন করে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তাঁর দেশের বিরুদ্ধে। কিন্তু ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েকশিয়ান সেই রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে দাঁড়িয়েই সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন। তিনি বললেন ‘‘আমাদের দেশ পারমাণু অস্ত্র চায় না, তৈরির চেষ্টাও করছে না। তবু আমাদের শাস্তি পেতে হয়, আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জের ৮০তম বার্ষিক সাধারণ সভায় মঙ্গলবার পশ্চিম এশিয়া নীতিতে কড়া অবস্থানের বার্তা দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, যে কোনও মূল্যে ইরানের সামরিক পরমাণু কর্মসূচি রুখে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘ইরানকে কখনও পারমাণু অস্ত্র নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। আমার অবস্থান খুবই সহজ। বিশ্বে সন্ত্রাসবাদের এক নম্বর পৃষ্ঠপোষককে সবচেয়ে বিপজ্জনক অস্ত্র ধারণ করতে দেওয়া যাবে না।’’ তার পরেই জবাব এল পেজ়েশিয়ানের তরফে।
একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আয়াতোল্লা খামেনেইয়ের দেশের প্রেসিডেন্ট বুধবার বলেন, ‘‘অঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে ইজ়রায়েল, অথচ শাস্তি পেতে হচ্ছে ইরানকে।’’ ঘটনাচক্রে, বুধবারই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছিলেন। তার পরেই এই বার্তা এল পেজ়েকশিয়ানের তরফে। প্রসঙ্গত, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সংঘাতের আবহে গত ১৩ জুন রাতে ইরানের রাজধানী তেহরান এবং একাধিক পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েলি যুদ্ধবিমান। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল, ‘অপারেশন রাইজ়িং লায়ন’! ঘটনাচক্রে, ইজ়রায়েলি হামলার দিনকয়েক আগে আইএইএ-র ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি জানিয়েছিলেন, পরমাণু বোমা নির্মাণের উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালাচ্ছে ইরান।
যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল ইরান। ইজ়রায়েলি হামলার ন’দিন পরে ২২ জুন ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র, ফোরডো, নাতান্জ় এবং ইসফাহানে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকার বি-২ বোমারু বিমান। ফেলা হয় বাঙ্কার ব্লাস্টার সিরিজের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা জিবিইউ-৫৭। সেই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’। ২৪ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে যুদ্ধবিরতি হলেও ওয়াশিংটনের দাবি মেনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে রাজি হয়নি তেহরান। যা নিয়ে নতুন করে অশান্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়। পে়জ়েকশিয়ান সরকারের দাবি, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যেই পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে তারা।