চুক্তি ভেঙে কেন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, প্রশ্ন ইরানের

নয়া নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরকারি টেলিভিশনে ইরানের উপ বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাই আমরা যথাযথ পথেই এগোব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মার্কিন নীতি এবং ট্রাম্পের ফাঁদে পা দেব না। খুব ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করব আমরা।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তেহরান শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। —ফাইল চিত্র।

নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাশিয়ার পরে এ বার সরব ইরানও। পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির দাবি, এই নিষেধাজ্ঞায় পরমাণু চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে।

Advertisement

গত মে মাসে দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব নেওয়ার পরে রুহানি শপথে বলেছিলেন, ইরানের সঙ্গে পশ্চিমী দুনিয়ার বিচ্ছিন্নতা দূর করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। কিন্তু তার মধ্যেই নতুন করে আমেরিকার তরফে এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা। গত কাল যাতে সিলমোহর দিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

কিন্তু তেহরানের দাবি, ২০১৫ সালে বিশ্বের অন্য শক্তিধর দেশের সঙ্গে মিলে যে পরমাণু চুক্তি হয়েছিল, তাতে সিদ্ধান্ত হয় ইরান যদি নিজের পরমাণু প্রকল্পে কিছু বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে, তা হলে তার বিনিময়ে তাদের দেশের উপরে নিষেধাজ্ঞার চাপ কমবে। রুহানি প্রশাসনের বক্তব্য, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সেই চুক্তি বাতিল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

Advertisement

নয়া নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরকারি টেলিভিশনে ইরানের উপ বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাই আমরা যথাযথ পথেই এগোব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মার্কিন নীতি এবং ট্রাম্পের ফাঁদে পা দেব না। খুব ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করব আমরা।’’

কূটনীতিকদের মতে, এই নয়া সঙ্কট রুহানির মাথাব্যথা বাড়াবে। পশ্চিমের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটিয়েছিলেন তিনি। তিনি যে দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হয়ে প্রেসিডেন্টের পদে এসেছেন, তার বড় একটা কারণ পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্কের এই উন্নতি। শপথে রুহানি পশ্চিমের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা দূর করার কথা বললেও দেশের শীর্ষ ধর্মগুরু আয়াতোল্লা আলি খামেনেই অবশ্য নিজের কট্টর অবস্থান থেকে সরেননি। তিনি বলেছিলেন, পশ্চিমের ‘কৌশলে’ পা দেবে না ইরান। তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘প্রতিপক্ষ এতটা কঠিন বলেই আমরাও কড়া অবস্থান নিচ্ছি।’’

আর নয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরে রুহানির কট্টর বিরোধীরা বলতে শুরু করেছেন, ‘‘আমেরিকাকে বিশ্বাস করা ওঁর উচিত হয়নি।’’ ইউরোপীয় কাউন্সিলে বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগে ইরান সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ এলি জেরানমায়ের বক্তব্য, ‘‘সময়টা একেবারেই উপযোগী নয়।’’

রাশিয়া, চিন এবং আমেরিকার সঙ্গে এর আগেকার পরমাণু চুক্তির শর্তে নিয়ে সায় ছিল ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির। ট্রাম্প প্রশাসন সে চুক্তি বাতিল করতে চাওয়ায় তারাও এর সমালোচনা করেছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও বারবার বলেছে, ইরান পরমাণু প্রকল্পের সব শর্ত মেনে চলেছে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে তথ্য মানতে হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনকে। এখন এই জটিল পরিস্থিতিতে রুহানি কোন পথে হাঁটেন, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন